চোখের যত্নে করণীয় বিষয়সমূহ-চোখের যত্নে প্রয়োজনীয় খাবার সমূহ

চোখ দেহের সবচেয়ে সংবেদনশীল অঙ্গ। তাই এই চোখকে ভালো রাখতে এর যথাযথ যত্ন নিতে হবে। চোখের জন্য উপযুক্ত খাবার খেতে হবে। আবার চোখের যত্নে আমাদের কিছু অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। নিয়মিত চোখের ব্যায়াম করতে হবে। 

চোখের যত্নে করণীয় বিষয়সমূহ-চোখের যত্নে প্রয়োজনীয় খাবার সমূহ

পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবে চোখের ক্ষতি হয়ে গেলে তা কোনভাবেই পরবর্তীতে পূরণ করা সম্ভব নয়। তাই চোখের যত্নে যে সকল খাবারগুলি আমাদের খাওয়া উচিত সেগুলো সম্পর্কে নিচে বিস্তরিত আলোচনা ও তার একটি তালিকা প্রস্তুত করা হলো।

আরো পড়ুনঃ রোগ প্রতিরোধের উপায় সমূহ-রোগ প্রতিরোধ বাড়াতে কি  কি খাবার খাবো ?

চোখের যত্নে যেসকল খাবার আমাদের নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে । 

মাছ

ইলিশ, রুই ইত্যাদি মাছ ফ্যাটি এসিডে পরিপূর্ণ। যা চোখের রেটিনার জন্য খুবই জরুরী। আমেরিকান ন্যাশনাল আই ইনস্টিটিউটের গবেষণা অনুযায়ী, ফ্যাটি অ্যাসিড প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সবুজ শাক

ঘন সবুজ রঙ্গের বিভিন্ন শাক আমরা নিত্য পেয়ে থাকি। ঘন সবুজ রঙের শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও পুষ্টি উপাদান । সবচেয়ে ভালো হয় নিয়মিত পালং শাক খেলে । পালংশাকে রয়েছে জিয়ানথিন ও লুটেইন।  লুটেইন চোখে পিগমেন্ট তৈরি করে যা ক্ষতিকর নীল রশ্মি থেকে আমাদের চোখকে বাঁচায়। এছাড়াও এই উপাদান বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চোখকে অন্ধত্বের হাত থেকে বাঁচাবে। প্রতিদিন ১০০ গ্রাম পালং শাক সালাদ অথবা তরকারি হিসেবে খেলেই চলবে।

কমলা ও লেবু জাতীয় ফল

ভিটামিন ’সি’ তে পরিপূর্ণ কমলা। এতে রয়েছে অনেক গুনাগুন। গবেষণায় দেখা গেছে, ১০ বছর প্রতিদিন একটি করে কমলা খেলে অন্ধত্বের হার অন্যদের তুলনায় ৬৪ শতাংশ হ্রাস পায়। তাই প্রতিদিন খাবারের তালিকায় একটি করে কমলা রাখুন।

ডিম

ডিমকে সুপার ফুড বলা হয় । চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতেও বেশ কার্যকর। বিশেষ করে ডিমের কুসুমে আছে লিউটেইন ও জিঙ্ক । যা রেটিনায় কোন ধরনের ক্ষয় প্রতিরোধে বেশ কার্যকরী।

বাদাম

বিভিন্ন বাদামে রয়েছে ভিটামিন ই সহ নানা ধরনের ভিটামিন ।এটি চোখের ক্রমাগত দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যাওয়া কে রোধ করে প্রতিদিন সামান্য পরিমাণে কাজুবাদাম খেলেও চোখের জন্য বেশ উপকার। এছাড়াও অন্যান্য বাদাম যেমন চীনা বাদাম কাঠ বাদাম ইত্যাদি বেশ উপকারী।

গাজর

গাজর চোখের জন্য অত্যান্ত ‍উপকারী একটি সবজি। প্রায় সকল কমলা রঙের সবজি ও ফলে থাকে বিটাক্যারোটিন। এটি চোখের ভিতর থেকে আলোর প্রবাহকে শোষন করে ও রাতে কম আলোয়ও দেখার শক্তি বাড়ায়। 

মাংস

স্তন্যপায়ী প্রাণীর মাংসের জিংক দৃষ্টিশক্তির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ । জিংক, ভিটামিন এ লিভার থেকে নিঃসৃত হতে সাহায্য করে। তাছাড়া জিংকের অভাবে অন্ধত্বের আশঙ্কা বেড়ে যায়।

আরো পড়ুনঃ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের তালিকা- প্রোটিনের উৎস ও প্রোটিন আমাদের শরীরে যে সকল কাজ করে।

যেসকল অভ্যাস ও ব্যায়াম আমাদের চোখের যত্নে উপকারী

ঘন ঘন মুখ ধোয়া

সুযোগ পেলেই চোখে পানি দিন মুখ ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। তবে অবশ্যই বিশুদ্ধ ও পরিষ্কার পানি ব্যবহার করার, নিরপাদ পানি  চোখে বেশি বেশি দিন । এতে করে চোখের ধুলোবালে পরিষ্কার হবে।

ধূমপান ছাড়ুন

ধূমপান চোখের জন্য খুবই ক্ষতিকর। নিকোটিনের ধোঁয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য যেমন ঝুঁকিপূর্ণ তেমনি আমাদের চোখের জন্যও ক্ষতিকর। তাই এই অভ্যাস যথা সম্ভব পরিত্যাগ করুন।

ম্যাসাজ করুন ও সূর্যের আলোর ব্যবহার নিন।

চোখ যখন কাজ করতে করতে ক্লান্ত তখন একটু ম্যাসাজ-এ উপকার মিলে। বিশেষ করে মাথায় হালকা ম্যাসাজ করলে ভালো বোধ করবেন। সূর্যের আলো চোখের ফ্রি চিকিৎসা দিয়ে থাকে। খুব সকালের এবং শেষ বিকেলের আলোয় চোখের যত্ন নিন। 

প্রযুক্তির ব্যবহারে সাবধানতা

মোবাইল, কম্পিউটার, টেলিভিশন সহ ইলেক্ট্রনিক্স প্রযুক্তি ব্যবহারে আমাদের সাবধান হতে হবে। কম্পিউটার, স্মার্টফোন ও টেলিভিশনের উজ্জ্বলতা বেশি রাখা যাবে না। এতে করে চোখের দৃষ্টি শক্তির ক্ষতি হয় । তাই চোখ ভালো রাখতে অবশ্যই কম্পিউটার, স্মার্টফোন ও টেলিভিশনের উজ্জ্বলতা কমিয়ে রাখুন।

চোখের ব্যায়াম

চোখের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য কিছু ব্যায়াম আছে । এ ব্যায়ামগুলো যেকোনো সময়ই করা যায় । আগে আপনি সোজা হয়ে বসুন, এরপর ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে চোখ ঘোরান, এভাবে পাঁচ থেকে দশ মিনিট করুন এবং তারপর চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নিন।

সুরক্ষিত রাখুন চোখকে 

বাহিরে যাওয়ার সময় সানগ্লাস পরে নিন। সুইমিং পুলে সাঁতারের সময় সুইম গিয়ার পড়ুন, যাতে ক্লোরিন যুক্ত জলের সংস্পর্শ থেকে সুরক্ষিত থাকে আপনার চোখ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url