কাঁচা পেঁয়াজ ও নামাজের বিধান -পেয়াজের উপকারিতা ও অপকারিতা

পেঁয়াজ আমাদের পরিচিত একটি মশলা জাতীয় উপাদান। আমরা পেঁয়াজ রান্নার কাজে প্রতিনিয়ত ব্যবহার করে থাকি। আবার পেঁয়াজ কাচাও খেয়ে থাকি। পেঁয়াজ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে।
কাঁচা পেঁয়াজ ও নামাজের বিধান -পেয়াজের উপকারিতা ও অপকারিতা

যেমন- কেউ গরুর মাংসের সাথে পেয়াজ খেতে পছন্দ করেন, আবার কেউ মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয় বলে খেতে চান না, আবার কেউ পেয়াজ খেলে নামাজ হবে কিনা এটা ভেবে কাচা পেঁয়াজ খান না, আবার কারো পেঁয়াজ কাটলে চোখের পানি বের হয় ইত্যাদি ইত্যাদি সমস্যা রয়েছে পেঁয়াজ কে ঘিরে। আজকে আমরা  পেঁয়াজের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে এবং পেঁয়াজ সম্পর্কে ধর্মীয় বিধান জানবো । পেঁয়াজে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ যা আমরা অনেকেই জানিনা।

আরো পড়ুনঃ রসুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জানুন-কাচা রসুনের গুনাগুন জানুন

পোস্ট সূচিপত্র

পেঁয়াজের পুষ্টিগুণ বা উপকারিতা

পেঁয়াজ হচ্ছে পুষ্টির ভান্ডার। পেয়াজে রয়েছে ভিটামিন সি ও প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। পটাশিয়াম বিভিন্ন কাজে লাগে। ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ, নার্ভ ট্রান্সমিশন ও কিডনি ফাংশন ইত্যাদি কাজে পটাশিয়াম জরুরী। এছাড়াও পেয়াজে ক্যালরি রয়েছে অনেক কম। ফলে এটি আপনার শরীরের ওজন বাড়াবেনা। যাদের ওজন বেড়ে যাওয়ার চিন্তা রয়েছে , তারা পেঁয়াজ খেতে পারেন। ওজন বাড়বে না। এছাড়াও পেঁয়াজ আরো উপকারিতা নিচে তুলে ধরা হলো।

হাড় গঠনে

মানব শরীরের হাড় গঠনে পেয়াজের ভূমিকা রয়েছে। পেঁয়াজে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল এবং ফাইবার যা আপনার হাড় গঠন করে। পেঁয়াজের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে ভিটামিন সি এবং এটি আপনার শারীরিক গঠনেও সহায়তা করে। পেয়াজের মধ্যে আরও রয়েছে ভিটামিন বি৯ এবং বি৬ যা শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও শরীরের ভিতর রক্ত কণিকার পরিমাণ বাড়াতে পেঁয়াজের ভূমিকা রয়েছে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য প্রতিদিন পরিমাণ মতো পেঁয়াজ সেবন করা উচিত। এছাড়া মহিলাদের পলিসিস্টিক ওভারির সমস্যায় পেঁয়াজ ভাল কাজ করে। স্পেস শরীরের রক্ত চলাচল নিয়ন্ত্রণ রাখে। ফলে হার্টের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলে।

হজম শক্তি বৃদ্ধি

হজম শক্তি বাড়াতে পেঁয়াজের অনন্য উপাদান এর মধ্যে রয়েছে প্রিবায়োটিক্স ও ফাইবার। যা হজমকারক হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও আবার শরীর বৃদ্ধি করতে প্রয়োজনীয় এনজাইম পেঁয়াজের মধ্যে রয়েছে। গবেষণা হতে জানা যায়, পেঁয়াজের মধ্যে থাকা নানান উপকরণ এর মধ্যে ইমিউনিটি বাড়াতে সহায়তা করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ 

বর্তমান আমাদের সমাজে জটিল রোগগুলোর মধ্যে ক্যান্সার অন্যতম। ক্যান্সার কত ভয়াবহ সেটা আমরা কম বেশি সবাই জানি। আর এই ক্যান্সার দূরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে পেঁয়াজ। বিশেষ করে কোলন ক্যান্সার দূরীকরণে বা ক্যান্সারে আশঙ্কা কমাতে ডাক্তারগণ পেয়াজ খাওয়ার পরামর্শ দেন।

জ্বর-সর্দির সমস্যা সমাধানে

সর্দি-কাশির সমস্যায় কম বেশি আমরা সবাই ভোগে থাকি। এমন কোন মানুষ নেই যার সর্দি কাশি হয় না। সর্দি কাশি থেকে মুক্তির জন্য আমরা ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে থাকি অথচ আমাদের ঘরের মধ্যে রয়েছে চিকিৎসা। আপনি মধুর সাথে কিছু পেঁয়াজের রস মিশিয়ে খেতে পারলে সর্দি কাশি থেকে মুক্তি পাবেন।

রোগের সংক্রমণ দূরে

পেঁয়াজের মধ্যে আছে কারমিনেটিভ এন্টি মাইক্রোবায়াল, এন্টিসেপটিক ও এন্টিবায়োটিক জাতীয় পদার্থ। যা শরীরের কোথাও সংক্রমণ দেখা দিলে তাদের মুক্তি মিলে পেঁয়াজের মাধ্যমে। তাছাড়া গলা ব্যথা, এলার্জি ও সামান্য শরীর ব্যথাই দারুন কাজ করে পেঁয়াজ।

দাঁতের চিকিৎসায়

দাত আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আপনার হাসি সুন্দর হলেও যদি দাঁত সুন্দর না থাকে তাহলে হাসির মূল্য নেই। অনেকের দাঁতে বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ হয়ে গর্ত হয়ে যায়। বিভিন্ন দাগ বসে যায় অথচ পেয়াজ থেকেই এই সংক্রমণ থেকে মুক্তি মেলা যায়। আমাদের প্রতিদিনের খাবার থেকে দাতের চিপাচাপায় খাবার লেগে থাকে। আর এ খাবার থেকে দাতের চিপায় যে সকল জীবাণু বাসা বাঁধে কাচা পেঁয়াজ খাওয়ার ফলে সেগুলো মরে যায় এবং সংক্রমণের সম্ভাবনা ও হ্রাস পায়।

চুল পড়া রোধ করে

চুলের যত্নে পেঁয়াজের গুরুত্ব রয়েছে । চুল পড়া বন্ধ করা ও চুলের সৌন্দর্যে এবং প্রাকৃতিকভাবে চুল বৃদ্ধিতে পেঁয়াজ সহায়তা করে। যারা চুল পড়া নিয়ে সমস্যা ভুগছেন তারা নিয়মিত কাঁচা পেয়াজ খেতে পারেন, এতে চুল পড়া রোধ হবে।

চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে

যারা চোখের দৃষ্টি শক্তির সমস্যাঃয় ভুগছেন, বিশেষ করে বয়ঃজৈষ্ঠ্য লোক। তারা নিয়মিত পেয়াজের রস খেলে চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং চোখের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি মিলে।

হার্টের সমস্যা সমাধানে 

যাদের কার্ডিওভাসকুলার ফাংশনে সমস্যা আছে, তারা নিয়মিত দুই চা চামচ পেয়াজে রস খেলে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে এবং নিয়মিত খেলে হার্টের সমস্যা হবে না। হার্টের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন খাবারের সাথে সালাদ খাওয়ার অভ্যাস করুন। আবার এই সালাদের সাথে পেঁয়াজ অবশ্যই রাখুন।

পায়খানা বা মল কষা হলে

অনেকের মল কষা হয় এবং ঠিকমতো বা পরিপূর্ণভাবে মলত্যাগ হয় না। মনে হয় যেন পায়খানার বেগ আরও রয়েছে কিন্তু পায়খানা বের হয় না অর্থাৎ গন্ডগোল দেখা দেয় । এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পেয়াজের জুড়ি নেই। এক টেবিল চামচ পেঁয়াজের রস এবং সমপরিমাণ গরম পানি মিশিয়ে খেলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। তবে সবচেয়ে ভালো হয় এটি দুপুরের খাবারের পর খেলে।

প্রস্রাবের ধারন ক্ষমতা বাড়াতে

প্রস্রাবের সমস্যা একটি জটিল সমস্যা। অনেকেই এ সমস্যায় দীর্ঘদিন ভোগে  থাকেন। কিন্তু লজ্জা হোক আর অলসতা হোক ডাক্তারের কাছে যেতে চায় না। অথচ দীর্ঘদিন ধরে এ অভ্যাস থাকলে আরো কঠিন রোগের সম্ভাবনা থাকে। অনেকের দেখা যায় ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ মনে হচ্ছে যেন, প্রস্রাব করতে গেলে অনেক প্রস্রাব আসবে অথচ বাস্তবে দেখা যায় যে পরিমাণ বেগ সে পরিমাণ প্রস্রাব আসে না।

আবার অনেকের প্রস্রাবের বেগ আসা মাত্রই ২-১ফোঁটা ঝরে পড়ে যায়। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন এক চা চামচ পেঁয়াজ রসের সাথে আধা কাপ পানি মিশিয়ে অন্তত একমাস খেতে হবে।এ ভাবে খাওয়ার পর ঘন ঘন প্রস্রাব রোধ হবে। পাশাপাশি বেগ  অনুযায়ী প্রস্রাব বেরিয়ে আসবে।

প্রচন্ড গরমে

গরমে পানি পিপাসা লাগবে এটাই স্বাভাবিক। এ সময় অনেকে ঠান্ডা পানি খেতে চায়। কারো কারো ক্ষেত্রে এটা খাওয়া মাত্রই সর্দি শুরু হয়ে যায়, শুরু হয়  গলা ব্যথা। এ সময় খাবার অথবা সালাদ খাওয়ার সঙ্গে কাচা পেঁয়াজ খেলে পিপাসা কম লাগবে এবং হিটস্ট্রোকের সম্ভাবনা থাকবে না।

হেচকি সমস্যা সমাধানে

হেচকি মূলত পানি কম খাওয়ার ফলে দেখা দেয় । কারো কাছে এটা অস্বস্তিকর । এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে এক চা চামচ পেঁয়াজের রস ও দুই চা চামচ পানি মিশিয়ে ২-৩ বার একটু একটু করে খেলে  হেচকি ওঠা বন্ধ হবে।

বমি ভাব ও বমি প্রতিরোধে

যাদের বমি ভাব ও যাদের অস্বাভাবিক বমি হয় তারা এটি ফলো করতে পারেন। পাঁচ ছয় ফোঁটা  পেয়াজের রস সাথে এক কাপ কুসুম গরম পানি মিশিয়ে পান করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

মাথা ধরা ও মাথা ব্যথায় 

সামান্য সর্দি জ্বর হলে কারো কারো মাথাব্যথা বা মাথা ধরা শুরু হয় ।এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ২/৪ ফোঁটা পেঁয়াজের রস নাকের কাছে এনে টানলে সাথে সাথে মাথা ধরা ও ব্যথা কমে যাবে।

মুখে ইনফেকশন হলে

মুখ ও দাঁত আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। সৌন্দর্য বলি আর খাওয়ার কাজে বলি এই অঙ্গগুলোর সমস্যা হলে কোন মূল্যে থাকে না,খুব অস্বস্তির অনুভব হয়। অথচ মুখের ভেতর ও দাঁতের বিভিন্ন রোগ ও ইনফেকশন থেকে বাঁচতে পেঁয়াজের ভূমিকা রয়েছে। প্রতিদিন এক দুটি করে পেয়াজ খাওয়ার অভ্যাস করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় ।

নাক দিয়ে রক্ত পড়া বন্ধ করতে

নাক দিয়ে রক্ত পড়া এই রোগটা অনেকের রয়েছে। এ রোগের বিভিন্ন কারণ থাকলেও সমাধান কিন্তু আপনার হাতের নাগালেই। কিছু পেঁয়াজের রস আপনার নাকের মধ্যে নিয়ে টানলে বা কয়েক ফোঁটা নাকের ভিতর দিলে এই নাকের দিয়ে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যাবে।

পেয়াজ খাওয়ার অপকারিতা

প্রতিটা জিনিসের যেমন উপকারিতা রয়েছে ঠিক তেমনি অপকারিতাও রয়েছে।  আমাদের শরীরে বিভিন্ন উপকার বা প্রয়োজনীয়তার জন্য পেয়াজের যেমন গুরুত্ব রয়েছে, ঠিক তেমনি কিছু কিছু অপকারিতাও রয়েছে।  চলুন দেখে নেই আমরা পেয়াজের অপকারিতা গুলো কি কি ?

মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে

হ্যাঁ ব্যাপারটা আমরা অনেকেই জানি যে , পেয়াজ খেলে মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে কাঁচা পেয়াজ। কাচা পেয়াজের গন্ধ শুধু নিজের কাছে না অন্যদের কাছেও অস্বস্তিকর বিষয়। তবে যেহেতু  কাচা পেয়াজ খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায় , সেহেতু আপনার প্রয়োজনের কাছে পেয়াজ খেতে পারেন এবং খাওয়ার পর যাতে দুর্গন্ধ সৃষ্টি না হয় সেজন্য ব্রাশ করে নিতে পারেন। পাশাপাশি কারো সামনে বা কারো সাথে কথা বলার আগে মিষ্টি জাতীয় কিছু মুখে অথবা চকলেট খেতে পারেন।

এলার্জির সমস্যা

পেয়াজ একটি অ্যালার্জিযুক্ত খাবার। যাদের অ্যালার্জি বেশি তারা পেয়াজ খাওয়া মাত্র অ্যালার্জি শুরু হয়। যাদের বেশি এলার্জি তারা পেয়াজ খাওয়া মাত্রই ত্বকে লাল ভাব দেখা দেয় এবং চোখ লাল হয়ে যায়। শুরু হয় ত্বকের চুলকানি।

পেটে গ্যাস সৃষ্টি হয়

পরিমাণের অধিক পেঁয়াজ খেলে আরেকটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। সেটি হচ্ছে অন্ত্রের মধ্যে গ্যাস সৃষ্টি হওয়া এবং খাদ্য হজমে বাধা সৃষ্টি করা। তবে কম পরিমাণ পেয়াজ খেলে এ সমস্যা হয় না । আপনি যদি প্রতিদিন বেশি পেঁয়াজ খান তাহলে আপনার পেট ফুলে যাওয়া, অস্বস্তি  অনুভব করা ও পেট ফাঁপা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং আপনার পাচনতন্ত্র টি  পেয়াজের প্রতি অসহিষ্ণু হলে লক্ষণগুলো আরো তীব্র হতে পারে এবং কখনো কখনো এটি বমি বমি ভাব ও ডায়রিয়ারকারণ হতে পারে।  

বুক জ্বালাপোড়া করা

বেশি পেয়াজ খেলে আবার কারো কারো বুক জ্বালাপোড়া শুরু হয়ে যায় এবং বুক জ্বালাপোড়া অধিকতর হয়ে থাকে। সেই সঙ্গে গর্ভবতী মহিলারা রয়েছেন হৃদরোগের ঝুঁকিতে। এটি মূলত ঘটে যখন আমাদের  পেটে উপস্থিত এসিড খাদ্যনালীতে উর্ধ্বমুখী প্রবাহিত হয়। এজন্য পরিমাণ মতো পেঁয়াজ খাবেন এবং গর্ভবতী মহিলাদের ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া না খাওয়াই ভালো।

রক্তচাপ বৃদ্ধি

অতিরিক্ত পটাশিয়াম শরীরের জন্য অমূল্যজনক। আমরা আগেই বলেছি, পেয়াজে প্রচুর পটাশিয়াম রয়েছে। আর পটাশিয়ামের কাজ হচ্ছে শরীরের রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণ রাখা আবার শরীরে পটাশিয়ামের পরিমাণ কমে গেলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। তাই পটাশিয়াম শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ । তবে অতিরিক্ত  পেয়াজ খেলে পটাশিয়াম বেড়ে যাবে এবং শরীরে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করবে।  ফলে শরীরে হাই ফোটেনসনের জন্ম দিবে এর ফলে ক্লান্তি, হালকা মাথা ব্যাথা, মাথা ঘুরা, বমি ভাব, হতাশা, চোখে ঝাপসা দেখা ইত্যাদি সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে । আপনি যদি উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপার টেনশনের নিয়ন্ত্রণের জন্য মেডিসিন গ্রহণ করেন তবে আপনার ওষুধ গুলোর জন্য পেয়াজ পরিমিত খাওয়া উচিৎ।

চোখে সমস্যা সৃষ্টি

পেঁয়াজের কথা শুনলে অনেকের চোখে পানি চলে আসে। আবার কেউ কেউ তো চোখে পানি আসার কারণে পেঁয়াজ কাটতে চায় না। পেয়াজ কাটার পরে বেশি চোখের মধ্যে লাগে এবং চোখে জ্বালাপোড়া ও ইরিটেশন সৃষ্টি করে। প্রকৃতপক্ষে পেয়াজ থেকে নিঃসৃত রসের সাথে থাকে সালফিউরিক এসিড। এই সালফিউরিক এসিডের কারণে পেঁয়াজ কাটার সময় চোখে জ্বালাপোড়া ও পানি আসে। সংস্পর্শে আসার কারনে শুধু চোখ জ্বালাপোড়া করা ও চুলকানি নয়, এই সালফিউরিক এসিডের কারণে মানুষ অন্ধ পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে।

কাচা পেয়াজ খেয়ে নামায আদায় করলে নামায হবে কি ?

কাঁচা পেয়াজ খেলে নামাজ হবে কিনা  ? এই প্রশ্ন নিয়ে আমাদের সমাজে নানান আলোচনা সমালোচনা ও তর্ক বিতর্ক হয়ে থাকে। কেউ কেউ বলে নামাজ হবে না, আবার কেউ কেউ বলে পেয়াজ একটি হালাল খাবার।  এটি খেলে নামাজ হবে না কেন ? আপনাদের সাথে আজকে এ দ্বিধার সমাধান দিবো । গুরুত্বপূর্ণ তথ্য টি মনে রাখার চেষ্টা করবেন। কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়াটা মাখরূহ বা অপছন্দনীয়।

প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, যারা কাচা পেয়াজ অথবা দুর্গন্ধযুক্ত হালাল খাবার গুলো খায় তারা যেন মসজিদে ধারে কাছে না আসে। মূলত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এটি বলেছেন যাতে আপনার মুখের দুর্গন্ধের কারণে অন্য জনের কাছে অস্বস্তিকর কারণ হয়ে না দাঁড়ায় আবার ফেরেশতারাও দুর্গন্ধ কারনে কাছে আসে না। তবে নবিজী বলেন নি, কাচা পেয়াজ খাওয়া যাবে না কিংবা এটি হারাম। কাচা পেয়াজ খাওয়া যাবে এবং এটি হালাল খাবার। 

উপরের আমরা কাচা পেয়াজের গুনাগুন নিয়ে আলোচোন করেছি। যেহেতু, এটি বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে সেহেতু কাচা পেয়াজ খাওয়া যাবে। তবে অবশ্যই  আপনি মসজিদে আসার পূর্বে ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার করে, মিসওয়াক বা ব্রাশ করবেন এবং যাতে গন্ধ না থাকে সেটি নিশ্চিত হবেন। যাতে আপনার মুখের দুর্গন্ধ অন্য জনের নামায আদায়ের বিঘ্ন না ঘটে। তবে সবচেয়ে বেশি ভালো হয়, নামাজে আসার আগে কাঁচা পেয়াজ না খেয়ে আসা। তবে মনে রাখতে হবে খাওয়া নাজায়েজ বা হারাম নয় এটি একটি হালাল বস্তু।

কিভাবে পেঁয়াজের গন্ধ কমানো যায়

মানব শরীরে তিন ধরনের রসের প্রয়োজন। তা হচ্ছে নোনতা, মিষ্টি এবং টকঅ তবে সবচেয়ে মজাদার বিষয় হলো পেঁয়াজের মধ্যে রয়েছে এই তিনটি উপাদান।  কিন্তু এটি একটু বেশি ব্যবহার করলে মুখে গন্ধ ,নিঃশ্বাসে গন্ধ থেকে যায়। ফলে কথা বলার সময় অন্য কারো কাছে অস্বস্তি বোধ হয়। তাই আপনি যদি  পেয়াজ খেয়ে থাকার অভ্যাস করেন।  তাহলে আপনার জানতে হবে কিভাবে পেয়াজের গন্ধ কমানো যায়।  এ গন্ধ তাড়ানোর বা কমানোর জন্য পেয়াজকে চার ভাগ করে, সারারাত টক দইয়ে ভিজিয়ে রাখলে গন্ধ কমে যাবে এবং আরো গুনাগুন যোগ হয়ে যাবে। একটি অমূল্য খাদ্যদ্রব্যে পরিণত হবে ।
 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url