খেজুরের উপকারিতা ও পুষ্টিগুন- কোন বয়সীরা বেশি খেজুর খাবেন।
খেজুর এমন একটি ফল যার উপকারের কথা বলে শেষ করা যাবে না। খেজুর একদিনে যেমন ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী অন্যদিকে স্বাস্থ্যের জন্যেও অনেক উপকারী। আজকে আমরা স্বাস্থ্যের জন্য খেজুরের উপকার সম্পর্কে জানবো।
খেজুরের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এছাড়াও এতে রয়েছে ভিটামিন এ, বি, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, সালফার, প্রোটিন, ফাইবার এবং আয়রন। আজকের ব্লগের মাধ্যমে আমি আপনাদের জানাবো
আরো পড়ুনঃ ফেসবুকের Reels ভিডিও ডাউনলোড করার নিয়ম জানুন।
খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে--------
মানুষের হায়াত বা বাঁচার একটা নির্দিষ্ট বয়স আছে। বর্তমান আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে সে বয়স ৬০ কিংবা ৭০ কিন্তু বর্তমানে আমাদের খাদ্য ব্যবস্থা উপর গবেষনা করে দেখা যায়, ৩০ বছর এর বেশি বা এর কাছাকাছি গেলেই আমাদের শরীরে নানান রকমের সমস্যা দেখা দেয়।
এক গবেষণা দেখা গেছে, ৩০ এর অধিক বয়স হলেই মানুষের মস্তিষ্কের স্মৃতি দারুণ ক্ষমতা হ্রাস পায়।শুধু তাই নয় এই বয়সে মানুষের কর্মশক্তি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, দৃষ্টিশক্তি, শরীরের শক্তি বা পেশী শক্তি ইত্যাদি হ্রাস পায়। এ সময় হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
হিমোগ্লোবিনের ভারসাম্যতা ঘটে। সমস্যা দেখা দেয় হজমে, ডায়াবেটিসে ও ক্যালসিয়ামের ঘাটতিতে। দেখা দেয় ত্বকে নানান রকমের সমস্যার লক্ষণ । আর এই সব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে খেজুর আপনাকে সুস্থ রাখতে সহাযতা করবে। চলুন খেজুরের গুনাগুন সম্পর্কে জেনে নেই।
আরো পড়ুনঃ এলাচ চা’য়ের পুষ্টিগুন ও প্রস্তত প্রণালী।
ওজন কমাতে সাহায্য করে খেজুর
খেজুর ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সকালে একটা ব্লাক কফির সাথে আপনি খেজুর খেতে পারেন বা সন্ধ্যায় দুধ চা বা গ্রিনটির সাথে। খেজুর অনেকক্ষণ ভিজিয়ে রেখে খেলে, উপকার বেশি পাওয়া যায়। এর ফলে ফাস্টফুডের প্রতি আপনার আগ্রহ কমে আসবে।
হাড় শক্তিশালী করে
খেজুর শীতল আবহাওয়া থেকে আমাদের সুরক্ষিত রাখে। কারণ খেজুরে রয়েছে ভরপুর পুষ্টি এবং প্রোটিন। আমাদের দুর্বল হাড়কে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও এতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম যা সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
শরীরের শক্তি যোগান
উপরে উল্লেখিত তথ্য অনুযায়ী খেজুরে প্রাকৃতিক চিনি রয়েছে। যা শরীরে শক্তি যোগান দেয়। মধ্যবয়সী এবং যারা শরীরের শক্তি পান না তারা শরীরের শক্তি বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত খেজুর খেতে পারেন। এর ফলে শরীর ক্লান্তি ভর করবে না । সব সময় সতেজতা অনুভব করবেন।
কোলেস্টেরল লেভেল ঠিক রাখে
আপনার প্রতিদিনের ডায়েটে অল্প পরিমাণে হলেও খেজুর রাখবেন। এতে কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক থাকবে এবং ওজন কমতেও সাহায্য করে।
দৃষ্টিশক্তির উন্নত করে
যারা অল্প বয়সে চোখে কম দেখেন বা ঝাপসা দেখেন এবং যারা বৃদ্ধ বয়সেও চোখে সমস্যা ভোগে থাকেন তারা নিয়মিত খেজুর খেতে পারেন । খেজুর রয়েছে নানান ভিটামিন । যেমন- বি১, বি২, বি৩ এবং বি৫। ভিটামিন এ১ এবং ভিটামিন সি সহ নানান ভিটামিন রয়েছে খেজুর। এই সকল ভিটামিন চোখের দৃষ্টিশক্তি প্রখর করে, পাশাপাশি রাতকানা রোগ হতে মুক্ত করতে সহায়তা করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে
খেজুরে যে ফাইবার রয়েছে তরল সুগার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে। এক্ষেত্রে খেজুরের সাথে টক দই মিশিয়ে খেলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়।
ত্বক সুস্থ রাখতে
খেজুরে রয়েছে ভিটামিন সি এবং ডি। দাতকে মসৃণ ও স্বতন্ত্র সহায়তা করে। এন্টি এজিং--- এর ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে খেজুর।
হিমোগ্লোবিনের সামঞ্জস্যতা তৈরিতে কাজ করে
হিমোগ্লোবিন আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেলে নানান সমস্যা দেখা দেয়। হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির জন্য প্রচুর পরিমাণে আয়রন দরকার । খেজুর রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। তাই খেজুর খেলে শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। শরীরে হিমোগ্লোবিনের অভাবে রক্তস্বল্পতা দেখা দিলে খেজুর খাওয়ার ফলে তা পূর্ণতা পায়।
হজম শক্তি
কিছু সময় খেজুর পানিতে ভিজিয়ে রেখে খাওয়া হলে হজমের উন্নতি হয়। এতে উচ্চ ফাইবার রয়েছে যা আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যতাও কমাবে।
স্ট্রেস কমায় খেজুর
স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে খেজুর। এতে রয়েছে ভিটামিন বি১, বি২ এবং বি৫। প্রতিদিন অল্প কিছু খেজুর খেলে ভিটামিনের চাহিদা পূরণ হবে। আর এর ফলে দূরে থাকবে নিষ্ক্রিয় ও চিন্তাযুক্ত জীবনধারা।
খেজুর চিনির আসক্তি কমায়
খেজুরে যে চিনি রয়েছে সেটা প্রাকৃতিক খেজুর। এটা খেলে চিনি খাওয়ার প্রবণতা কমে যায় এবং এটি চিনি খাওয়ার পরিমাণও কমে। শরীরের ওজন ও ঠিক ঠাক থাকে।
স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে
খেজুরে রয়েছে পরিপূর্ণ ভিটামিন। ফলে এই পরিপূর্ণ ভিটামিনের কারণে মানুষের স্নায়ুতন্ত্রের কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে যারা কোন কিছু ভুলে যান, মনে রাখতে পারেন না। বিশেষ করে যারা মধ্যবয়সী তারা বেশি করে খেজুর খেতে পারেন। পাশাপাশি যারা লেখাপড়া করে তারা পড়ালেখা মনে রাখার জন্য নিয়মিত খেজুর খেতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ ঘামাচি থেকে মুক্তি পেতে ১১টি কার্যকরী উপায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
খেজুর শরীরের নানা রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে। যেমন- গলা ব্যথা, জ্বর, সর্দি ইত্যাদি। খেজুর ঠান্ডায় বেশ ভালো কাজ করে। খেজুর অ্যালকোহল বিষক্রিয়া বেশ উপকারী। নিয়মিত খেজুর খাওয়ার অভ্যাস করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url