এলাচ চা প্রস্তুত প্রণালী ও পুষ্টিগুন-এলাচের উপকারিতা ও অপকারিতা

এলাচ একটি প্রয়োজনীয় মসলা। আমরা প্রায় বিভিন্ন খাবারের স্বাদ আনতে এলাচ ব্যবহার করে থাকি। নানান প্রকার মিষ্টান্ন তৈরিতে এলাচের ব্যবহার যেন না করলেই নয়। এলাচে রয়েছে মনোমুগ্ধকর সুবাস।

এলাচ চা প্রস্তুত প্রণালী ও পুষ্টিগুন-এলাচের উপকারিতা ও অপকারিতা

নানাবিধ গুণের কারণে এলাচকে মসলার রানী বলা হয়ে থাকে। আপনি কি জানেন এলাচের মিষ্টি গন্ধের রহস্য কোথায় লুকিয়ে আছে ? এলাচের ভেতরে রয়েছে দারুন সুবাসিত তেল। যা এর অভ্যন্তরে ছোট দানার ভেতর লুকায়িত। 

আর এই তেল থেকেই আপনি পেতে পারেন অনন্য সব স্বাস্থ্যগত উপকার। আর এই উপকার সরাসরি পেতে আপনি তৈরি করে ফেলতে পারেন এলাচ দিয়ে যা এর মাধ্যমে আপনি সরাসরি  টার্পিনাইন, বর্ণিওল, ইউক্যালিপটল, ক্যাম্ফর আর লিমোনিন- এর মতো স্বাস্থ্যমৌলের নানা উপকার পেতে পারেন।

সূচিপত্র

এলাচের পুষ্টিগুন

  • পাইরিডক্সিন
  • ম্যাঙ্গানিজ
  • ফসফরাস
  • ভিটামিন এ
  • নিয়াসিন
  • ফাইবার
  • থায়ামিন
  • পটাশিয়াম
  • সোডিয়াম
  • ক্যালসিয়াম
  • কপার
  • প্রোটিন
  • ক্যালরি
  • কার্বোহাইড্রেট
  • ফ্যাট
  • ম্যাগনেসিয়াম
  • আয়রণ
  • রাইবোফ্লাবিন
  • ইলেক্ট্রলাইট
  • ভিটামিন সি
  • জিংক

এলাচ চা প্রস্তুত প্রণালী।

যারা শ্বাসকষ্ট জনিত সম্যায় ভোগছেন তাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি মশলা হচ্ছে এলাচ এবং এলাচ তৈরি চা। সর্দি, কাশি সমস্যা দেখা দিলে এলাচ চা খাবেন। মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে ও মুখের বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে বাচতে এলাচ চা খেতে পারেন। এবার আসুন জেনে নেই এলাচ চা প্রস্তুত প্রণালী।

এলাচ চা তৈরি তে আপনার লাগবে ৫টি সবুজ এলাচ,  ১ টুকরো দারুচিনি, চিনি পরিমাণ মতো, দুধ ১ কাপ, গোলমরিচ ১টি,  লবঙ্গ ৪টি, চা পাতা ২ চা চামচ, আদা গুড়া ১ চা চামচ, আদা-মিহি করে কাটা কয়েক টুকরো।

 এলাচের খোসা ফেলে ভেতরের দানা বের করে নিবেন। সব মশলা একসাথে গুড়া করে নিবেন। প্যানে ৪ কাপ পানি গরম করে চা পাতা নিন।  গুড়া করে মশলা ও চিনি দিন।  এ দুধ ও আদা গুড়া দিয়ে ফোটান। নামানোর আগে আদা কুচি দিয়ে অল্প আচে রেখে দিন কয়েক মিনিট।  পরিবেশন করুন গরম গরম এলাচ চা

এলাচ চায়ের উপকারিতা

এলাচের সাথে চা পাতা মিশিয়ে পানি ফুটিয়ে চা তৈরি করে ফেলুন । এবার স্বাদ নিন দারুন সুগন্ধযুক্ত চায। শুধু স্বাদ নয়, এতে রয়েছে দারুন স্বাস্থ্যগত উপকার। আসুন জেনে নেই তেমন কিছু উপকারের রহস্য কথা।

হজমে সহায়ক

শাস্ত্রে বর্ণিত আছে, খাওয়ার পরে এক কাপ এলাচা আপনার হজমে সহায়ক হবে। মশলাদার ও জাঙ্ক ফুড খাওয়ার ফলে আমাদের পাকস্থলীতে এসিডিটি সৃষ্টি হতে পারে। আর এ থেকে আমাদের পরিত্রান দিতে পারে এক কাপ এলাচ চা।

দাঁতের জন্য উপকারী

প্রাকৃতিক এন্টি ব্যাকটেরিয়াল গুন আছে এলাচ চায়ের মধ্যে। এলাচ চা আমাদের দাঁতের ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবকে দমন করব।  তাই খাবার পরে এক কাপ এলাচা শুধু  আমাদের  নিঃশ্বাসকে সুগন্ধযুক্ত করবে না সেইসাথে প্রতিরোধ করবে আপনার দাঁতে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ।

সর্দি থেকে বাঁচতে

যদি আপনি ঠান্ডা জনিত কোন অসুখে ভোগে থাকেন, তাহলে নিয়মিত পান করতে পারেন এলাচ চা। সর্দি বা ঠান্ডার জমাটবদ্ধতা থেকে আপনাকে আরাম দেবে। এছাড়াও রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে এলাচ চা।

এলাচ চা এন্টি ব্যাকটেরিয়াল

এটা অনেকেই জানেনা যে, এলাচ বা এলাচের চা এন্টিব্যাকটেরিয়াল। যা আমাদের চামড়ার উপরে নানা আঘাত বা ক্ষতকে দ্রুত সরিয়ে তুলতে দারুনভাবে সহায়ক।

প্রি-রেডিকেল ধ্বংস করে

এলাচ চায়ে আছে বিপুল পরিমাণ এন্টিঅক্সিডেন্ট। যা আমাদের শরীরে কোষের জন্য ক্ষতিকারক প্রি-রেডিকেলস ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে। এতে আরো আছে এন্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য, যা আর্থারাইটিস, মাথা ব্যাথা ও নানারকম ইনজুরি থেকে আমাদের দ্রুত সেরে উঠতে সহায়তা করে।

রক্ত সঞ্চালনের উন্নতি

রক্ত সঞ্চালনের উন্নতি সাধনের জন্য প্রতিদিন ১ থেকে ২ টি এলাচ আমাদের শরীরে রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা দ্রুত উন্নতি সাধন করে। সেই সাথে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ক্লাসে থাকা আয়রন আমাদের শরীরে লোহিত রক্তকণিকে বাড়ায়। আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য ভূমিকা রাখে এলাচ বা এলাচের চা ।

এছাড়াও আমাদের হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে, শরীর কি নিবিড়শ করা ডি টক্সি ফিকেশন ওজন কমাতে এবং মাথা ব্যাথা থেকে দ্রুত মুক্তি দিতে এলাচা পান করুন অনেক উপকার পাবেন।

এক নজরে এলাচের উপকারিতা 

  • এলাচ হার্টের জন্য উপকারী।
  • হজম শক্তি বৃদ্ধিতে উপকারী্
  • ডিটক্সিফিক্সন থেকে মুক্তি দিতে উপকারী।
  • এলাচ দেহের ক্ষতিকর টক্সিন দুর করতে উপকারী।
  • এলাচ অনিদ্রা জনিত সমস্যা দূর করতে উপকারী।
  • এলাচ রক্ত সঞ্চালন সঠিক রাখতে উপকারী।
  • এলাচ মুখের খারপ গন্ধ দূর করতে উপকারী।
  • মুখের ব্রণ ও দাগ দূর করতে উপকারী।
  • চুল পড়ার সমস্যা দূর করতে উপকারী।
  • অ্যাজমার সমস্যা সমাধানে এলাচ খুব উপকারী।
  • ক্যান্সার প্রতিরোধে এলাচ খুব উপকারী।

এলাচের অপকারিতা

  • গর্ভাবস্থায় এলাচ খাওয়া ‍উচিত না।
  • কিডনিতে স্টোনের সমস্যা থাকলে এলাচ খাওয়া ঠিক না।
  • অতিরিক্ত এলাচ খেলে কাশি এবং বমি হতে পারে।

এই ছিলো আজকের পোস্ট । আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আপনার প্রিয়জনদের শেয়ার করুন ও আমাদের আপনার মতামত কমেন্ট করে জানিয়ে দিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url