নামায মাকরূহ হওয়ার ৫০টি কারন-যেসব কারনে নামায মাকরূহ হয়
নামাজ হচ্ছে বেহেস্তের চাবি।। ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের মধ্যে নামাজ একটি। নামাজ ব্যতিত কেউ নিজেকে মুসলমান দাবি করলে, সে পূর্ণাঙ্গ মুসলিম নয়। প্রতিদিন আমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হয়।
নামাজ আদায়ের বেশ কিছু নিয়ম কানুন আমাদের মানতে হয়। কিন্ত আমাদের গাফিলতির কারণে এসব নিয়ম কানুনের ঘাটতি রয়ে যায়। যার ফলে আমাদের নামাজ পূর্ণভাবে আদায় হয় না। আজকে আমরা জানবো যেসব কারণে নামাজ মাকরূহ হয়। মাকরুহ বলতে অপছন্দনীয় অর্থাৎ নামাজের মধ্যে আমাদের যে সকল কর্মকাণ্ড আল্লাহ পছন্দ করেন না।
আরো পড়ুনঃ নামায ভঙ্গের কারনসমূহ-যেসব কারনে নামায ভঙ্গ হয়।
নামাজের মাকরূহ সমূহ-নামায মাকরূহ হওয়ার ৫০টি কারন।
১. মাথার পাশে অথবা কাদের উভয়দিকে কাপড় বা চাদর ইত্যাদি ঝুলিয়ে রাখলে নামাজ মাকরূহ হয়।
২. নামাজে দাঁড়ানো অবস্থায় কপাল অবস্থায় পরিস্কার করলে নামাজ মাকরূহ হয়।
৩. সামনের কাতারে জায়গা থাকা সত্ত্বেও পিছনের কাতারে দাঁড়ালে নামাজ মাকরুহ হবে।
৪. নামাজের সামনে ,ডানে বামে অথবা মাথার উপরে কোন জীবজন্তুর ছবি থাকলে নামাজ মাকরূহ হবে।
৫. সূরা পড়া শেষ না হতেই রুকুতে গেলে নামাজ মাকরুহ হবে।
৬. আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকলে বা দৃষ্টিপাত করলে নামাজ মাকরূহ হবে।
৭. হাত ও পায়ের আঙ্গুল ফোটালে মাকরুহ হয়।
৮. নামাযে ডানে, বামে দেখলেও নামাজ মাকরূহ হবে।
৯. সিজদার সময় পুরুষের হাত মাটিতে বিছাইয়া দিলে নামাজ মাকরূহ হবে।
১০. টুপি ছাড়া খালি মাথায় নামাজ পড়লে নামাজ মাকরূহ হবে।
১১. জামাত তিন গুটিয়ে নামাজ আদায় করলে নামাজ পড়লে নামাজ মাকরুহ হবে
১২. বিনা কারণে কাশি দিলে নামাজ মাকরূহ হবে।
১৩. নামাজের সময় কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখলে নামাজ মাকরূহ হবে।
১৪. জীবজন্তু অথবা ছবিযুক্ত কাপড় পরিধান করে নামাজ আদায় করলে নামাজ মাকরূহ হবে।
১৫. জামার বোতাম খোলা রেখে নামাজ আদায় করলে নামাজ মাকরূহ হবে।
১৬. নামাজ পড়ার জন্য মসজিদের স্থান নির্দিষ্ট করে রাখলে নামাজ মাকরূহ হবে।
১৭. নামাজ পড়ার সময় লুঙ্গি অথবা পায়জামা উপরের দিকে টান (অতিরিক্ত উপরে উঠালে) দিলে নামাজ মাকরূহ হবে।
১৮. পুরুষের ক্ষেত্রে উরু বা রানের সাথে পেট মিলিয়ে সিজদা করলে নামাজ মাকরূহ হবে।
১৯. শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এদিক সেদিক নড়াচড়া করলে নামাজ মাকরুহ হবে।
২০. সিজদায় যাবার সময় বিনা কারণে হাঁটুর পূর্বে হাত মাটিতে রাখলে নামাজ মাকরুহ হবে।
২১. আজানের পর প্রথম জমাতে ইমাম মেহেরাব ছেড়ে অন্য জায়গায় নামাজ পড়লে নামাজ মাকরুহ হবে।
২২. জামাতে নামাজ পড়ার সময় বাম দিকে লোক বেশি হলে এবং ডান দিকে কম হলে নামাজ মাকরুহ হবে ।
২৩. নামাজ পড়ার সময় থুতু ফেললে নামাজ মাকরূহ হবে।
আরো পড়ুনঃ নামায না পড়ার শাস্তি-নামায না পড়লে যেসব শাস্তি পেতে হবে।
২৪. নামাযের মধ্যে পুরুষের মাথার চুল বেধে রাখলে নামায মাকরূহ হবে।
২৫. নামাযের মধ্যে কোমরে হাত দিয়ে দাড়িয়ে থাকলে নামায মাকরূহ হবে।
২৬. নামাযের মধ্যে ঘাড় ফিরিয়ে থাকালে নামায মাকরূহ হবে। যদি ঘাড় কাবার দিক হতে ঘুরে যায় তবে নামায ভেঙ্গে যাবে।
২৭. নামাযের মধ্যে বিনা কারনে চোখ বাকিয়ে তাকালে নামায মাকরূহ হবে।
২৮. মহিলাদের উভয় পা খাড়া করে বসলে নামায মাকরূহ হবে।
২৯. শুধু কপাল মাটিতে ঠেকিয়ে সিজদা করলে নামায মাকরূহ হবে।
৩০. এক তাসবিহ পরিমাণ পা মাটিতে রাখার পর বিনা কারণে এক পা উঠিয়ে রাখলে বা সিজদার মধ্যে দুই পা উপরে উঠয়ে রাখলে নামায মাকরূহ হবে।
৩১. হাত বা পায়ের আঙ্গুল সমূহ কিবলার দিক হতে অন্যদিকে ফিরিয়ে গেলে নামায মাকরূহ হবে।
৩২. নামাযের মধ্যে ইচ্ছাকৃত হাই তোললে নামায মাকরূহ হবে।
৩৩. চোখ বন্ধ করে নামায পড়লে নামায মাকরূহ হবে।
৩৪. হাত বা মাথার ইশারায় সালামের জবাব দিলে নামায মাকরূহ হবে।
৩৫. রুকুর মধ্যে হাটুতে হাত না রাখলে নামায মাকরূহ হবে।
৩৬. উভয় সিজদার মাঝের বৈঠকে বা প্রথম বৈঠকে বা শেষ বৈঠকে উরুর উপর হাত না রাখলে নামায মাকরূহ হবে।
৩৭. নামাযের মধ্যে ইচ্ছাকৃত সুন্নতের খেলাফ কাজ করা বা অহেতুক নামাযের মধ্যে মশা, পিপড়া বা উকুন মারলে নামায মাকরূহ হবে।
৩৮. মুখের ভিতর কোন কিছু রেখে নামায আদায় করলে নামায মাকরূহ হবে।
৩৯. নামাযের মধ্যে ইচ্ছাকৃত ভাবে কোন কিছুর গন্ধ বা ঘ্রান নিলে নামায মাকরূহ হবে।
৪০. পরিধান করা পোশাক বা পাখা দিয়ে বাতাস করলে নামায মাকরূহ হবে।
৪১. পাগড়ির উপর সিজদা করলে নামায মাকরূহ হবে।
৪২. দু্ই কাধে চাদর বা কাপর পেচিয়ে নামায আদায় করলে নামায মাকরূহ হবে।
৪৩. লোভনীয় খাবার জমা রেখে নামায আদায় করলে নামায মাকরূহ হবে।
৪৪. জলন্ত আগুন সামনে রেখে নামায আদায করলে নামায মাকরূহ হবে।
৪৫. কারো জায়গায় তার অখুসি বা অসম্মতি সত্ত্বে নামায আদায় করলে নামায মাকরূহ হবে।
৪৬. বিনা কারনে উচু বা নিচু স্থানে সিজদা করলে নামায মাকরূহ হবে।
৪৭. বিনা কারনে নামাযে কোন কিছুর সাথে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে বা বসে থাকলে নামায মাকরূহ হবে।
৪৮. নামাযের মধ্যে সূরা বা তাসবিহ গননা করতে আঙ্গুল ব্যবহার করলে নামায মাকরূহ হবে।
৪৯. প্রথম রাকাতের চেয়ে দ্বিতীয় রাকাত বেশি লম্বা করলে নামায মাকরূহ হবে।
৫০. ফরজ নামাযের একই রাকাতে কোন সূরা বা আয়াত বার বার পাঠ করলে নামায মাকরূহ হবে।
উপরে উল্লেখিত বিষয় গুলো সম্পর্কে আমরা সচেতন হবো। আমরা নামায আদায় করার সময় যেন, এই ভূল না করি সেদিকে খেয়াল রাখবো এবং বিষয়গুলো পরিচিত বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশি সবার সাথে শেয়ার করবো। মহান আল্লাহ আমাদের বিষয়গুলো মানার ও চলার তৌফিক দান করুক। আমিন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url