মোবাইলের ক্ষতির দিকসমূহ-মোবাইল ব্যবহারের সাবধানতা
মোবাইল ফোন বর্তমান প্রযুক্তির অনবদ্য উপহার। আমাদের সবার হাতে এখন মোবাইল ফোন থাকে। এই ডিভাইসটির ব্যবহার যত বেশি বাড়ছে ততই এর সঙ্গে নানা ধরনের জটিলতা বাড়ছে।
সৃষ্টি হচ্ছে নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত জটিলতা। আবার অনেকেই আছেন দেহের এমন সব স্থানে মোবাইল রাখেন যা মোটেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। মোবাইল ফোন সাথে রাখার জন্য যে ক্ষতিগুলো হয় তা থেকে সাবধানতা অবলম্বনের জন্য কিছুটা আলোকপাত করা হলো।
পোস্ট সূচিপত্র
- শার্টের পকেটে বা বুকের কাছাকাছি
- ত্বকের সংস্পর্শে
- প্যান্টের পিছনের পকেটে
- প্যান্টের সামনের পকেটে
- চার্জার লাগানো অবস্থায়
- বালিশের নিচে না রাখা
- মস্তিষ্কের সমস্যা
- দীর্ঘক্ষণ মোবাইলে কথা না বলা
- শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া
- আলোর বিকিরণ
- বাচ্চাদের মোবাইল না দেওয়া
মোবাইল ব্যবহারের সাবধানতা সমূহ
১.শার্টের পকেট বা বুকের কাছাকাছি
শার্টের বুক পকেটে মোবাইল ফোন রাখা উচিত নয়। এটি হৃদপিন্ডের সমস্যা ও স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই বুক পকেটে বা বুকের কাছাকাছিতে মোবাইল ফোন রাখা যাবে না।
২.ত্বকের সংস্পর্শে
মূলত দেহের কোন অংশেই মোবাইল ফোন রাখা উচিত নয়। আর ত্বকের সংস্পর্শে তো রাখা যাবেই না। এর পরিবর্তে একটি আলাদা ব্যাগে মোবাইল ফোন বহন করা উচিত।
৩. প্যান্টের পেছনের পকেটে:
প্যান্টের পিছনের পকেটে অনেকেই মোবাইল ফোন রাখেন। এতে করে শরীরে মারাত্মক প্রভাব পড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, পেছনের পকেটে মোবাইল রাখলে তা প্যাড ও পায়ের ব্যথার কারণ হতে পারে। এছাড়া পেছনের পকেটে মোবাইল ফোন থাকলে তা হারিয়ে যেতে পারে কিংবা হঠাৎ কোথাও বসে পড়লে দুর্ঘটনা বশত ভেঙ্গেও যেতে পারে।
৪. প্যান্টের সামনের পকেটে
মোবাইল ফোন সামনের পকেটে রাখা একদমই উচিত নয়। কারণ এতে পুরুষের শুক্রাণু উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায়। একইভাবে নারীদেরও ক্ষতি করতে পারে। তাই মোবাইল ফোন প্যান্টের সামনের পকেটেও রাখা ঠিক নয়।
৫. চার্জার লাগানো অবস্থায়
মোবাইল ফোন চার্জার লাগানো অবস্থায় ব্যবহার করা ঠিক নয়। এতে ফোনের ক্ষতির মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। আবার অনেক সময় মোবাইলের বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে থাকে।
৬. বালিশের নিচে
ঘুমানোর সময় আমাদের অনেকেরই অভ্যাস আছেই বালিশের নিচে মোবাইল রাখা। এতে ঘুমের সমস্যা ও মস্তিষ্কের নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাই ঘুমানোর সময় বালিশের নিচে কখনোই মোবাইল ফোন রাখা একেবারেই উচিত নয়।
৭. অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরমের সময়
খুব বেশি ঠান্ডা আবহাওয়া মোবাইল ফোন রাখলে তাতে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে একই ভাবে অতিরিক্ত গরমে ও তা নষ্ট হতে পারে এমন কি বিস্ফোরিত হওয়া অসম্ভব নয় এ কারণে মোবাইল ফোন সহনীয় তাপমাত্রায় রাখতে হবে।
৮. চার্জ রাখা অবস্থায় কথা বলা
মোবাইল চার্জে রেখে কখনোই কথা বলা উচিত নয়। মোবাইল চার্জে রাখলে মোবাইলের চারপাশে ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি হয়। এ সময় মোবাইল ফোন থেকে দূরে থাকাই ভালো। খুব বেশি কথা বলার প্রয়োজন হলে ব্লুটুথ ব্যবহার করা ভালো।
৯. বাচ্চাদেরকে ফোন দিবেন না
ছোট ছোট বাচ্চারা অনেক সময় আমাদেরকে খুব জ্বালাতন করে তাই আমরা ওদের দুষ্টুমিকে দূরে রাখতে ওদেরকে মোবাইল ফোন দিয়ে থাকি। মোবাইল থেকে নির্গত হওয়া তরঙ্গ বাচ্চাদের মস্তিষ্কে চাপ সৃষ্টি করে।
১০. মস্তিষ্কের সমস্যা সৃষ্টি
গত শতাব্দীর শেষ দিকে আমেরিকান বিজ্ঞানী এলান ফ্রে দেখিয়েছেন কিভাবে মোবাইলে মাইক্রোওয়ে ভ মানুষের মস্তিষ্কে আঘাত হানতে পারে।আমরা যখন মোবাইল ফোনে কিছু শুনি তখন মাইক্রোওয়ে ব আমাদের কানে পৌঁছায়।
পরীক্ষায় ফ্রে দেখিয়েছেন ,ওই মাইক্রোওয়েভ পৌঁছে যায় আমাদের মস্তিষ্কের টেম্পোরাল লোব অংশে। মস্তিষ্ক তখন একে গ্রহণ করছে শব্দ হিসেবে।এতে ক্ষতি হচ্ছে মস্তিষ্কের কোষ।
১১. শ্রবণ শক্তি কমে যাওয়া
দীর্ঘক্ষণ বা একটানা অনেকক্ষণ ধরে মোবাইল ফোনে কথা বললে শ্রবণশক্তি কমে যেতে পারে। অনেক সময় আমরা ফোনে কথা বললে দেখবেন মোবাইল ফোন এবং আমাদের কান গরম হয়ে যায়। তাই মোবাইল ফোনে যত কম কথা বলা যায় ততই ভালো।
১২. আলোর বিকিরণ
চিকিৎসকরা বলেছেন,একটানা দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখের ক্ষতি হয়। আলোর অতিরিক্ত বিকিরণের ফলে চোখের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
১৩. দীর্ঘক্ষণ মোবাইলে কথা বলা উচিত নয়।
-যদি বেশিক্ষণ কথা বলতে হয় তাহলে ব্লুটুথ অথবা হেডফোন এর সাহায্য নিতে হবে।
-রাতে মোবাইল ফোন যতটা সম্ভব থেকে দূরে রাখা উচিৎ। আর অবশ্যই মাথা থেকে দূরে রাখতে হবে
-বাচ্চাদেরকে মোবাইলে কিছু দেখা থেকে বিরত রাখুন
-শরীরের সাথে দীর্ঘক্ষণ চেপে মোবাইল ফোন রাখবেন না।
-দীর্ঘক্ষণ মোবাইলের দিকে না তাকিয়ে থেকে মাঝেমধ্যে চারপাশে তাকানো উচিত। এতে করে চোখের ক্ষতি অনেকখানি কমবে।
পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন, ফলো করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url