বাংলাদেশের সেরা ৫টি এনজিও এর পরিচয় ও কার্যক্রম-Top 5 NGO
পোস্ট সূচিপত্র
১. ব্রাক
ব্র্যাক (বাংলাদেশ রুরাল অ্যাডভান্সমেন্ট কমিটি) একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন। জাতীয় পর্যায়ের সারাদেশ জুড়ে উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড পরিচালনার পাশাপাশি সংগঠনটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তার কর্মসূচির বিস্তার ঘটিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১১ কোটি লোককে সংস্থার উন্নয়ন কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে এসেছে। ১৯৭২ সালে ফজলে হোসেন আবেদ সিলেট জেলার শাল্লা এলাকায় ব্রাক প্রতিষ্ঠা করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ভারত থেকে প্রত্যাগত উদাস্তুদের ত্রাণ ও পুনর্বাসন সহায়তা মূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সূচনা হয়। পরবর্তী সময়ে ব্রাক বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চলে দারিদ্র দূরীকরণ এবং দরিদ্র জনগণের ক্ষমতায়নের মত দীর্ঘমেয়াদী বিষয়ে মনোনিবেশ করে। বর্তমানে ব্রাক ক্ষুদ্রঋণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা, মানবাধিকার নারী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রভৃতি কার্যক্রমের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের জীবন পরিবর্তনের লক্ষ্যে তাদের কর্মসূচি পরিচালনা করছে। বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার ৫১৯ টি উপজেলায় ৬৯ হাজার ৪২১টি গ্রামে ব্র্যাক তার কার্যক্রম পরিচালিত করছে।
ব্র্যাক দরিদ্র জনগণের স্বাস্থ্যসেবার চাহিদা পূরণে ব্যাপক ভিত্তিক চিকিৎসা, পুষ্টি এবং জনসংখ্যা কার্যক্রম পরিচালনা করে। ব্র্যাকের স্বাস্থ্যসেবার সুবিধাভোগী লোকের সংখ্যা প্রায় ১০০ মিলিয়ন। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য সেবিকেরা গ্রামের দরিদ্র জনগণের স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করেন। তারা গ্রামবাসীর প্রাথমিক চিকিৎসা ও বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ বিষয়ক প্রশিক্ষণও দিয়ে থাকেন।
ব্র্যাকের সদস্যদের এবং গ্রাম্য জনগোষ্ঠীর প্রজনন স্বাস্থ্য সেবার জন্য ব্র্যাক বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর মধ্যে রয়েছে বয়সন্ধিকালে, পারিবারিক জীবন সম্পর্কিত শিক্ষা, গর্ভনিরোধ ব্যবস্থা, এসটিডি/আরটিআই নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, এইচআইভি/এইডস এর সম্পর্কে জ্ঞান ও স্বাস্থ্য উন্নয়নে বিশেষ সেবা এবং গর্ভবতী মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য সচেতনতা । এছাড়া যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে কর্মসূচি পরিচালনা করছে।
তাছাড়া ওয়াটার স্যানিটেশন এন্ড হাইজিন (ওয়াশ) কর্মসূচির মাধ্যমে পানীয় জল পয়ঃনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যবিধি পালনে জনগোষ্ঠীকে সচেতন করে তোলার জন্য ব্রাক ব্যাপক ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা, পরিবেশ দূষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ জামা কাপড়ে দাগ লেগেছে ?চিন্তা নেই পরিত্রানের ১৩টি উপায় জেনে নিন।
ব্র্যাকের অন্যান্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে মানবাধিকার ও আইন সহায়তা কর্মসূচি, সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচি, অ্যাডভোকেসি এবং জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি কর্মসূচি। এগুলির মাধ্যমে ব্র্যাক মানবাধিকার রক্ষা, লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠা ও সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখছে। ব্র্র্যাকের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি হচ্ছে অতিদরিদ্র কর্মসূচি। গ্রামীণ দরিদ্র বিশেষত নারীপ্রধান অতিদরিদ্র পরিবারের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন করাই এই কর্মসূচির লক্ষ্য।
২০০২ সালে আফগানিস্তানে কার্যক্রম শুরু করার মাধ্যমে ব্র্যাক আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার কর্মসূচিকে সম্প্রসারিত করে। ঐ সময় থেকে এশিয়া এবং আফ্রিকার আটটি দেশে ব্র্যাক দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে তার উদ্ভাবনী শক্তি এবং বহুমুখী বিস্তত। কর্মসূচির অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশে দারিদ্র্য দূরীকরণে এবং জীবনমান উন্নয়নের উদ্যোগে নবতর শক্তি ও গতির সঞ্চার করেছে। বর্তমানে ব্র্যাক আফগানিস্তান,পাকিস্তান,শ্রীলঙ্কা,লাইবেরিয়া,তানজানিয়া,উগান্ডা,দক্ষিন সুদান,সিয়েরা লিওনে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
প্রধান কার্যালয়ের ঠিকানাঃ
- অবস্থান: ব্র্র্যাক সেন্টার-৭৫ মহাখালী,ঢাকা-বাংলাদেশ।
- পোস্টাল কোড: 1212
- ই-মেইল আইডি: info@brac.net
- যোগাযোগ নাম্বার: +88 02 2222 81265
- অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: www.brac.net
২. আশা
আশা একটি বেসরকারি সংস্থা। পুরো নাম অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট । সমাজের দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষের সহায়তার জন্য মোঃ সফিকুল হক চৌধুরি ১৯৭৮ সালে আশা প্রতিষ্ঠা করেন। আশা দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সমাজের বিভিন্ন কর্মকান্ডে অংশগ্রহনে উৎসাহ যোগায। ১৯৭৮-১৯৮৫ সালে আশা দরিদ্র মানুষের জন্য বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ড সম্পাদন করে আইনে সহায়তা প্রদান করে।
১৯৮৫-১৯৯১ সালে সংস্থাটি শিক্ষা,ঋনদান,ক্ষুদ্র কৃষি, নারী উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা ও প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করে। বর্তমানে আশা ক্ষুদ্রঋন কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রাম ও শহরের দরিদ্র নারীদের উন্নয়নে কাজ করে। এছাড়া আশা সদস্যদের সঞ্চয় .ক্ষুদ্র ইন্সিওরেন্স ও চিকিৎসা অনুদান কার্য্ক্রম পরিচালনা করে।আশা’র ক্ষুদ্রঋন কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিলের উৎস হচ্ছে সংস্থার নিজস্ব অর্থ। সদস্যদের সঞ্চয় এবং পল্লী কর্মসংস্থান ফাউন্ডেশনের ঋন।
বর্তমানে বাংলাদের ৬৪টি জেলায় আশা’র ব্রাঞ্চ অফিস ৩২৩৬টি, কর্মী ২৪ হাজার ও সদস্য সংখ্যা প্রায় ৫৫ লাখ। আশা ২০০৯ সালে হবিগন্জের চুনারুঘাটে একটি প্রবীণ নিবাস প্রতিষ্ঠা করেছে ও সর্বস্তরের মানুষকে চিকিৎসা সেবা, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও রেমিট্যান্স সেবা প্রদান করার জন্য একটি কমপ্লেক্স গড়ে তুলেছে।
আরও পড়ুনঃ বিদ্যুৎ বা কারেন্ট বিল বেশি আসার কারণ ও করণীয়।
আশা ২০০৭ সালে বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও বাস্তবায়নে “আশা ইন্টারন্যাশনাল” নামে একটি সংস্তা প্রতিষ্ঠা করেন। এটি মরিশাসে রেজিস্ট্রিকৃত। সিএমআই নামে নেদারল্যান্ডভিত্তিক ইক্যুইটি সংস্থা আশা ইন্টারন্যাশনালকে তহবিল সরবরাহ করছে। বর্তমানে আশা ইন্টারন্যাশনাল ভারত,পাকিস্তান,শ্রীলংকা, আফগানিস্তান,ফিলিপাইন,নাইজেরিয়া,ঘানা ও কম্বোডিয়া ক্ষুদ্রঋন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আশা ২০০৭ সালে দরিদ্র ও নিম্মআয়ের পরিবারের ছেলেমেয়েদের স্বল্পখরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগদানের জন্য আশা ইউনিভার্সিটি ,বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে। বর্তমাওেন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে চার হাজারেরও বেশি ছাত্রছাত্রী আশা ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করছে।
প্রধান কার্যালয়ের ঠিকানাঃ
- অবস্থান: এএসএ টাওয়ার,২৩/৩, বীর উত্তম এএনএম নুরুজ্জামান সড়ক,শ্যামলী, ঢাকা-বাংলাদেশ।
- পোস্টাল কোড: 1207
- ই-মেইল আইডি: info@asabd.org
- যোগাযোগ নাম্বার: +88 02 58155614
- অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: www.asa.org.bd
৩. বুরো বাংলাদেশ
প্রধান কার্যালয়ের ঠিকানাঃ
- অবস্থান: বাড়ি নং, ১২/এ, ব্লক নং CEN(F), রোড নং ১০৪, গুলশান-২,ঢাকা-বাংলাদেশ।
- পোস্টাল কোড: 1212
- ই-মেইল আইডি: buro@burobd.org
- যোগাযোগ নাম্বার: 88-02-55059860,88-02-55059861, 88-02-55059862
- অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: www.burobd.org
৪. কারিতাস বাংলাদেশ
প্রধান কার্যালয়ের ঠিকানাঃ
- অবস্থান: আউটার সার্কুলার রোড, শান্তিবাগ.ঢাকা-বাংলাদেশ।
- পোস্টাল কোড: 1217
- ই-মেইল আইডি: info@caritasbd.org
- যোগাযোগ নম্বর:+880-2-48315405-9
- অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: www.caritasbd.org
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url