ঘামের দুর্গন্ধ থেকে বাচতে করণীয়-ঘামের দুর্গন্ধ দূরের উপায়

বাহিরে এখন প্রচুর রোদের তাপ । সাতে গরমের তাপমাত্রা তো আছেই। এই গরমের অন্যতম একটি সমস্যা হচ্ছে অতিরিক্ত ঘাম দেওয়া। যা শরীরে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে এবং নিজের কাছে অসস্তিবোধ তো হয়ই।

ঘামের দুর্গন্ধ থেকে বাচতে করণীয়-ঘামের দুর্গন্ধ দূরের উপায়

ঘামের মাধ্যমে শরীর অতিরিক্ত তাপ বর্জন করে দেহের তাপমাত্রার ভারসাম্য ঠিক রাখে। কিন্ত এই ঘামেই আবার বিভিন্ন সময়ে হয়ে উঠে লজ্জার কারন। কোনও অনুষ্ঠানে বা কর্মক্ষেত্রে যখন লোকের সঙ্গে মেলামেশা করার প্রয়োজন পড়ে,ঘাম ও ঘামের দুর্গন্ধ আপনাকে অপ্রস্তত করে তোলে। 

আরও পড়ুনঃ জেনে নিন মুখে রোদে পোড় দাগ থেকে মুক্তির উপায়

 পোস্ট সুচিপত্র

মশলাদার খাবার বন্ধ

আমাদের ত্বকের উপরিভাগে রোমকূপে থাকে একধরণের ব্যাকটেরিয়া, যা ঘাম থেকে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে। ঘাম হওয়া আটকাতে গেলে প্রথমেই যে দিকে নজর দেওয়া উচিত তা হল খাদ্যভ্যাস। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যত কমপরিমাণে ফাস্টফুড, মশালাদার খাবার ও তেলের খাবার রাখা যায় ততই ভালো। এ ধরণের খাবার পেটে ঢুকলেই প্রচন্ড তাপ উৎপন্ন করে। তাই প্রয়োজনের অতিরিক্ত প্রোটিন খাদ্য বাদ রাখুন তালিকা থেকে। বাদ দিতে ক্যাফাইন জাতীয় খাবার কফিও যা প্রচন্ড তাপ উৎপন্ন করে।

হালকা রঙ্গের জামা পড়ুন

গাঢ় রঙের জামা যত বেশি পরবেন, শরীর আশেপাশের তাপ আরও বেশি শোষণ করবে। ফলে ঘামও নিশ্চিত । তাই চেষ্টা করুন দিনের বেলা হালকা রঙের জামা পরতে। ফলে ঘামও নিশ্চিত। তাই চেষ্ট করুন, দিনের বেলা হালকা রঙের জামা পরতে। হালকা রঙের জামা যে কোনও রকমের তাপ প্রতিফলিত করে শরীরের তাপমাত্রা ঠিকা রাখতে সাহায্য করে। যদি একান্তই অনুষ্ঠানে যেতে ট্রেন্ডি জাামা পরতে হয় যা হালকা রঙের নয়, তবে ভিতর পরুন একটি অন্তর্বাস। এটি আপনার ঘাম শুষে নেবে ও বাইরে আসতে দেবে না।

রোদে বের হবেন না

রোদ কেন, প্রয়োজন না থাকলে কোনও বেশি তাপমাত্রার এলাকাতেই যাবেন না। চেষ্টা করুন ছায়া আছে দিনের বেশিরভাগ সময় এমন এলাকায় থাকতে। জানালার পর্দা টেনে রাখুন যাতে বাইরের তাপ রুমের ভিতর প্রবেশ করে রুমের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিতে না পারে। আপনার শরীরকে যত বেশি বাইরের তাপমাত্রা থেকে বাচিয়ে রাখতে পারবেন, ততই আপনার ঘাম কম হবে।

লেবু সাথে মধু মিশিয়ে ব্যবহার করুন

লেবুর সাথে মধুর সংমিশ্রণ ঘামের দুর্গন্ধ প্রতিরোধের অন্যতম প্রধান ঘরোয়া উপায়।খু্বই সিম্পল একটি বাটিতে হালকা গরম পানি নিন, তাতে ২ টেবিল চামচ মধু আর ৩ টেবিল চামচ লেবুর রস নিন। তারপর আপনার যেসব স্থান ঘামে সে সব স্থানে এই সলিউশন দিয়ে রিন্স করে নিন। তারপর শুকনো তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলুন। লেবু শরীরে ঘামের পরিমাণ কমিয়ে আনে।

চাপ নেবেন না

প্রতিদিনের রুটিনে কতরকম কাজ থাকে। ঠিকঠাকভাবে সাফল্যের সঙ্গে তা হবে কি না তা নিয়েও চিন্তা কম নয়। চাপ নেবেন না। আপনি যত চাপ নেবেন ততই শরীরে বাড়বে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ যা আপনার দেহের তাপমাত্রা বাড়িযে দেয়। ফলে ঘাম অবশ্যম্ভাবী। প্রতিদিন সকালে ব্যায়াম, চাপের থেকে মুক্তি পাওয়ার এক দারুন উপায়। 
নিয়মিত ব্যায়াম করলে সব চিন্তা ও  চাপ নিজে থেকেই দুর হয়ে যাবে। ফলে আপনার মাথা সারাদিন চিন্তামুক্ত থাকবে। স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ কমলে কমবে শরীরের ঘাম উৎপাদন ও। 

অ্যান্টিপারস্পিরান্ট ব্যবহার করুন

ঘাম হওয়া আটকাতে ব্যবহার করতে পারেন ডিওডোরেন্ট বা অ্যান্টিপারস্পিরান্ট। কিন্ত সবাই যে ভুল করে তা করবেন না। এটি সকালে গোসল করে বগলে গলায় বুকে দেবেন না, বরং দিন রাতে শুতে যাওয়ার সময়। লোমকূপে গিয়ে এর কাজ করতে বেশ কিছুটা সময় লাগে, তাছাড়া রাতে উষ্ণতা কম থাকায় এটি ব্যবহার করে ভালো ফল মেলে। শোয়ার আগে তাই  এটি  শরীরে যেখানে ঘাম বেশি হয় সেখানে দিয়ে শুতে যান। বেশকিছু রাত এমন অভ্যাস করলে দেখবেন আপনার ঘাম হওয়া আগের থেকে অনেক কমে গেছে।

গরম পানির সাথে নিমের ব্যবহার

নিম এক্সট্রাকট একটি শক্তিশালী প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারী যা শরীরের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। একটি বাটিতে ফুটন্ত গরম পানি নিয়ে তাতে কিছু নিমের পাত ছেড়ে দিন। তারপর অপেক্ষা  করুন কমপক্ষে ২০ মিনিট। এই কয় মিনিটে নিম পাতা থেকে সমস্ত নির্যাস বের হয়ে যাবে আর পানিও একটু ঠান্ডা হয়ে আসবে। এবার শুকনো তোয়ালে এই পানিতে ডুবিয়ে আপনার যেসব স্থান ঘামে সেসব স্থান মুছে দিন।

ভিনেগারের ব্যবহার

আপনি শুনে হয়ত অবাক হবেন যে ভিনেগার অতিরিক্ত ঘামের পরিমাণ অনেক কমিয়ে আনে। রাতে ঘুমানোর আগে ভিনেগার আপনার আর্ম পিটে লাগিয়ে ঘুমান আর সকালে উঠে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত করতে থাকলে আস্তে আস্তে আপনি ঘামের যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পাবেন। 
এছাড়া নিয়মিত শসা খাওয়ার অভ্যাস,সালফিউরিক সমৃ্দ্ধ খাবার যেমন ব্রকলি, বাধাকপি, ফুলকপি,পরিমাণে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন বিশেষ করে আপনার শরীরে যদি ঘামের পরিমাণ বেশি হয় তাহলে উপরিউক্ত বিষয় গুলোর প্রতি যত্নবান হওয়ার বিকল্প নেই।
  

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url