তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা-তরমুজের বিচি’র পুষ্টি গুনাগুন
গ্রীষ্মকালে শরীর ঠান্ডা রাখতে তরমুজের জুড়ি নেই। এতে প্রচুর পরিমাণে জলীয় অংশ আছে, যা দেহের পানির চাহিদা পূরণ করতে সহায়তা করে। তাই গ্রীষ্মকালের খাদ্যতালিকায় তরমুজ রাখা উচিত। তরমুজ খাওয়ার সময় অনেকে তরমুজের বিচি ফেলে দেয়।
কিন্ত জানেন কি ? তরমুজে বীজের কত গুন ? মরণ ব্যাধি থেকে আপনাকে বাচাতে পারে তরমুজ। তরমুজের কিছু গুন নিয়ে আজকের টিপস।
আরও পড়ুন ঃ খাটি মধু চিনার উপায়-কিভাবে বুঝবেন এটি খাটি মধু কিনা!
পোস্ট সূচিপত্র
- পুষ্টিগুন
- ওজন কমায়
- ক্যান্সার প্রতিরোধ
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন
- প্রদাহ নাশক
- চোখের উপকার
- ত্বক ও চুলের যত্নে
- তরমুজ শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করে
- তরমুজের বিচির উপকারিতা
পুষ্টিগুন
তরমুজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ আছে। যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী । এর পটাশিয়াম শরীরে ফ্লইড ও মিনারেলসের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
ওজন কমায়
খুব কম পরিমাণে ক্যালরি আছে তরমুজে। আর তাই তরমুজ খেলে পেট ভরে যায়। কিন্ত সে অনুযায়ী তেমন কোনো ক্যালরি শরীরে প্রবেশ করে না। ফলে তরমুজ খেয়ে পেট পুরে ফেললেও ওজন বাড়ার শঙ্কা থাকে না।
ক্যান্সার প্রতিরোধ
তরমুজে লাইকোপিন নামে একটি উপাদান আছে। যা প্রোটেস্ট ক্যান্সারের ঝুকি কমিয়ে দেয়। এ ছাড়া তরমুজ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভালো উৎস। এটি ক্যন্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী কোষগুলোকে নির্মূল করতে সহায়তা করে। তাছাড়াও তরমুজে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬ এ ভরপুর। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, উল্টোদিকে ভিটামিন বি৬ অ্যান্টিবডি গঠনে সাহায্য করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন
তরমুজ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখতে সাহায্য করে। আবার ধমনীর নানা সমস্যা সমাধানেও ভূমিকা রাখে এটি।
প্রদাহ নাশক
তরমুজে ফ্ল্যাভোনয়েড,ক্যারটিনয়েড,ট্রিটেপেনইডিস ও ফেনোলিকের মতো যৌগ আছে। এগুলো শরীরের যে কোন প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। আবার অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ তরমুজ খেলে স্ট্রেসজনিত অসুস্থতাও কমে যায়।
চোখের উপকার
নিয়মিত তরমুজ খেলে চোখ ভালো থাকে এবং চোখের নানান সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ক্যারটিনয়েড রাতকানা প্রতিরোধেও কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
ত্বক ও চুলের যত্নে
চুল ও ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিন A ও ভিটামিন C খুবই গুরত্বপুর্ণ। তরমুজে এই দুটি ভিটামিনই পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে। ভিটামিন সি শরীরে কোলাজেন নামের প্রোটিন তৈরিতে সাহায্য করে, যা চুল শক্তিশালী করে। তাছাড়া ত্বকের বলিরেখা ও শুষ্কতা দূর করতেও সাহায্য করে। উল্টোদিকে ভিটামিন এ ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ও পুরানো ত্বক ঝরিয়ে দিয়ে নতুন ত্বক সৃষ্টিতে সাহায্য করে। তাই বলাই যায়, ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্যের জন্য তরমুজ খাওয়া খুবই উপকারী। তবে তরমুজ শুধুমাত্র খাওয়া ছাড়াও পেস্ট বানিয়ে ত্বকে লাগালেও উপকার পাওয়া যায়।
তরমুজ শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করে
শরীরের স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপ ঠিক রাখার জন্য পানির গুরুত্ব অপরিসীম। বিভিন্ন অঙ্গ ও তন্ত্রের কার্যক্ষমতা ঠিক রাখা, দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন ও কোশে কোশে পুষ্টির সরবরাহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই পর্যাপ্ত পানির আবশ্যক।
অথচ গরমের দিনে ঘামের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে পানি দেহের বাইরে বেরিয়ে যায়। তাই পানিসমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করা আবশ্যক হয়ে দাড়ায়। তরমুজের মধ্যে প্রায় ৯২% পানি থাকে। তাই দেহে পানির ঘাটতি পূরণের ক্ষেত্রে তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা উল্লেখযোগ্য। তাছাড়া কম ক্যালোরিযুক্ত হওয়ায় দেহের নিয়ন্ত্রন ও সমস্যা হয় না।
তরমুজের বিচির উপকারিতা
তরমুজের বিচিতে এমন এক রাসায়নিক থোকে যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে অত্যন্ত কার্যকরী। তাছাড়া তরমুজের বীজে থাকা একাধিক খনিজ গর্ভবতী মহিলাদের বিশেষ উপকারী। তরমুজের বীজে থাকা লাইসিন নামে উৎসেচক ডায়াবেটিস বা মধুমেহ নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে। ডায়াবেটিসে চমকে দেওয়ার মতো ফল দিতে পারে তরমুজের এই বীজ। এ ছাড়া তরমুজের বীজে ক্যালোরির মাত্রা অত্যন্ত কম। এছাড়া তার মধ্যে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম, লোহা ও ফোলেট যা গর্ভবতী নারীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
তবে এ সবই থাকে তরমুজের বীজের খোলের নীচে থাকা অভ্যন্তরীণ অংশে। ফলে তরমুজের বীজ চিবিয়ে খেলেই তার সম্পূর্ণ উপকার মেলা সম্ভব। কারণ, সাধারণত বীজের ওপরের কঠিন খোল হজম করতে পারে না প্রাণীর পরিপাকতন্ত্র।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url