মাহে রমজানের করণীয় বিষয়সমূহ-মাহে রমজানের বর্জনীয় বিষয়সমূহ

মহিমান্বিত মাস পবিত্র রমজান মাস। রমজান মাসের উপকারিতা ও বরকত পরিপূর্ণভাবে লাভ করার জন্য এ মাসে করণীয় কাজগুলো মহব্বতের সাথে আমাদের করতে হবে এবং বর্জনীয় বিষয়গুলোকে আমরা বর্জন করে চলতে হবে।

মাহে রমজানের করণীয় বিষয়সমূহ-মাহে রমজানের বর্জনীয় বিষয়সমূহ

তাহলে মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের ক্ষমা ও পুরস্কারপ্রাপ্তি করবেন। মহিমান্বিত মুহূর্তগুলো আমাদের জীবনে বারবার ঘুরে ফিরে আসে। যদি আমরা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে পারি তাহলে আমরা দুনিয়া ও আখিরাতে সুন্দর হবে থাকতে পারবো। কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে পবিত্র রমজান মাসের করণীয় বিষয়গুলো নিচে তুলে ধরা হলো।

আরও পড়ুন ঃ মাহে রমজানের তাৎপর্য ও ফযিলত-রোযাদারদের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত পুরস্কার।

পোস্ট সূচিপত্র

  • রোযা রাখা 
  • তারাবির নামাজ
  • কুরআন তেলাওয়াত করা 
  • সাহারি খাওয়া
  • ইফতার করা 
  • রোজাদার কে ইফতার করানো
  • তাওবা ইস্তেগফার করা
  • দোয়া করা
  • ইফতারের আগ মুহূর্তে দোয়া করা
  • রমজান মাসের  বর্জনীয়  বিষয়সমূহ
  • অশ্লীল কথা-বার্তা বন্ধ করতে হবে
  • মিথ্যা কথা না বলা 
  • গীবত না করা 

রোযা রাখা 

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন,- হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে যেমনি ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের  পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পারো। সূরা বাকারা ২:১৮৩

হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু বলেন. ’রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,- যখন তোমরা রমজানের চাঁদ দেখবে তখন রোজা রাখবে। যখন শাওয়ালের চাঁদ দেখবে তখন থেকে রোজা বন্ধ করবে। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে ৩০দিন রোজা রাখবে। সহীহ বুখারী: ১৯০৯

অপর এক হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,- আল্লাহ তাআলা বলেন রোজা আমার জন্য আমি নিজের প্রতিদান দেব। কেয়ামতের দিন রোজাদারদের জন্য একটি বিশেষ হাউজ থাকবে, যেখানে রোজাদার ব্যতীত অন্য কারো আগমন ঘটবে না।

রমজানের রোজা প্রত্যেক সুস্থ, প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ এবং হায়েজ নেপাসমুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক নারীর উপর ফরজ। শরয়ী ওযর ছাড়া এ মাসের একটি রোজাও কোন মুসলমান  ইচ্ছাকৃতভাবে না রাখলে জঘন্য অপরাধি হিসেবে সাব্যস্ত হবে। দ্বীনের মৌলিক বিধান লঙ্ঘনকারী ও ইসলামের ভিত্তি বিনষ্টকারী হিসেবে গণ্য হবে এবং কঠিন শাস্তির উপযুক্ত হবে।

হাদিসে এসেছে, হযরত আবু উসামা রাদিয়াল্লাহু বলেন, আমি রাসুল পাক সাঃ. কে বলতে শুনেছি, আমি ঘুমিয়ে ছিলাম স্বপ্নে দেখলাম আমার কাছে দুই ব্যক্তি আগমন করেছে। তারা  আমার  বাহুদ্বয় ধরে দুর্গম পাড়ায় নিয়ে গেল।  আমাকে বলল, আপনি পাহাড়ে উঠুন। আমি বললাম, আমি তো উঠতে পারব না। তারা বলল, আমরা আপনাকে উপর উঠা সহজ করে দেব।

আমি উপরে উঠলাম। যখন পাড়াহের সমতলে পৌঁছলাম। হঠাৎ ভয়ংকর আওয়াজ শুনতে পেলাম। বললাম, এসব কিসের আওয়াজ। তারা বললো এটা জাহান্নামিদের আত্মনাদ। তারপর আমাকে নিয়ে এগিয়ে চলল হঠাৎ কিছু লোক দেখতে পেলাম। যাদেরকে তাদের পায়ের মাংস বেশি দ্বারা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

তাদের মুখের দুই প্রান্ত ছিড়ে ফেলা হয়েছে এবং তা থেকে রক্ত ঝরছে। আমি বললাম, এরা কারা তারা বলল , যারা ইফতারের সময় হওয়ার আগেই রোজা ভেঙ্গে ফেলে। মুসতাদরাকে হাকেম: ১ হাদিস নং ১৬০০

তারাবির নামাজ পড়া

বরকতময় মাহে রমজানের দিন রাত উভয়টি মূলত ইবাদতের জন্য। দিনের ইবাদত হল রোজা যা শরীয়তের ফরজ আর রাতের ইবাদত হল তারাবি নামাজ যা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এই আমল ফরজ না হলেও এর ফজিলত মর্যাদা অনেক। হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত- রাসূল সা.  বলেন- যে ব্যক্তি পূর্ণ ঈমান ও বিশ্বাসের সাথে সওয়াবের আশায় রমজানের রাতে তারাবীহ আদায় করে তার পূর্ববর্তী গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। সহীহ বুখারী: ২০০৯

হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রাদিয়াল্লাহু বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম ইরশাদ করেছেন ,-আল্লাহ তাআলা তোমাদের উপর রমজানের রোজা ফরজ করেছেন । আর আমি কিয়ামুল লাইল তথা তারাবি সুন্নাত করেছি। সুতরাং যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা ও তারাবি আদায় করবে যেদিন সে ওই দিনের মতো নিষ্পাপ হয়ে যাবে। যেদিন মাতৃগর্ভ থেকে শুদ্ধ ভূমিষ্ঠ হয়েছিল। রমজানের পূর্ণ কল্যাণ ও বরকত লাভ করতে হলে তারাবির ব্যাপারে অবশ্যই যত্নবান হতে হবে।  মুসনাদে আহমদ: ১৬৬০

কুরআন তেলাওয়াত করা

রোজা এবং রমজানের সঙ্গে কুরআনের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এজন্যই রমজানে কোরআন নাজিল হয়েছে এবং এজন্যই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মোবারক কে কুরআন তেলাওয়াতের খুব গুরুত্ব দিতেন। এই প্রসঙ্গে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম ছিলেন সবচেয়ে বেশি দানশীল ও বদান্য, রমজানে তার দানশীলতা ও  বদান্যতা অনেক বেড়ে যেত। প্রত্যেক রমজানে জিব্রাইল আ. তার সঙ্গে মিলিত হতেন এবং পুরো কুরআন একে অপরকে শুনাতেন।-সহিহ বুখারী: ০৬

মূলত এই সুন্নতের ভিত্তিতেই তারাবির মাধ্যমে মুসলমানরা সারা রমজানে একবার পুরো কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করে এবং শুনে । নামাজের বাইরেও নিজেরা কোরআন খতম করে। যারা রমজান মাসে কুরআন তেলাওয়াতে ব্যস্ত থাকে তাদের ব্যাপারে সুসংবাদ এসেছে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ এরশাদ করেন,-রোযা ও কোরআন কেয়ামতের দিন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে।

রোযা বলবে, হে রব! আমি তাকে খাদ্য ও যৌন চাহিদা থেকে বিরত রেখেছি, অতএব তার  ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন, কোরআন বলবে, আমি তাকে রাতের ঘুম থেকে বিরত রেখেছি (অর্থ াৎ না ঘুমিয়ে সে তেলায়াত করেছে) তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। রাসুল সাল্লাম বলেন তাদের উভয়ের সুপারিশ গ্রহণ করা হবে। মুসনাদে আহমাদ: ৬৬২৬

সাহারি খাওয়া

রোজার প্রস্তুতির জন্য যে আহার করা হয় তার নাম সেহরি। সেহরি খাওয়ার সুন্নাত। পেট ভরে খাওয়া জরুরি নয়। এক ঢুক পানি পান করলেও সুন্নত আদায় হয়ে যাবে। হাদিস শরীফে এসেছে,- রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা সেহরি খাও কেননা সাহারীতে বরকত রয়েছে। সহীহ মুসলিম: ১০৯৫ 

অন্য এক হাদিসে এসেছে,- সেহরি খাওয়া বরকত পূর্ণ কাজ সুতরাং তা ছেড়ে দিও না। যদিও তা এক ঢোক পানি দিয়ে হোক না কেন। কেননা, যারা সেহেরী খায়, আল্লাহ তাআলা তাদের উপর রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতাগণ তাদের জন্য রহমতের দোয়া করেন। মুসনাদে আহমদ: ১০৭০২

সুবহে সাদেকের কাছাকাছি সময় সেহরি খাওয়া মুস্তাহাব। তবে একটু দেরি করা মাখরুহ- যে সুবহে সাদিক হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা হয়।

ইফতার করা 

সারাদিন রোজা রাখার পর সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গে যে আহার করা হয় তার নাম ইফতার। এটা শরীয়তে অনেক বড় একটি আমল। এই আনন্দপূর্ন আমলের জন্য ঘোষণা করা হয়েছে বড় পুরস্কার। যেহেতু ইফতার অনেক বরকতের। তাই এ বরকতপূর্ণ আমল শুরু করতে গিয়ে বিলম্ব করতে নিষেধ করা হয়েছে। রাসুল সালাম ইরশাদ করেছেন,-  লোকেরা যতদিন প্রথম সময় ইফতার করার বিষয়ে যত্নবান হবে ততদিন তারা কল্যাণের পথে থাকবে। সহীহ বুখারী: ১৯৫৭

ইফতার খেজুরদারা করা মুস্তাহাব। খেজুর না পেলে পানি দ্বারা ইফতার করবে। হযরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু বলেন,-রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাগরিবের নামায পড়ার আগে তাজা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। তাজা খেজুর না পেলে শুকনা খেজুর দ্বারা ইফতার করতেন আর তাও না পেলে এক ঢোক পানি দ্বারা ইফতার করতেন । জামে তিরমিযী: ৬৯২

সেহরি ও ইফতার তখনই বরকত পূর্ণ হবে যখন এক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি পরিহার করে পূর্ণ সংযম রক্ষা করা হবে। কিন্তু আমাদের রমজানের ইফতার অবস্থা কি একটু চিন্তা করে দেখি। পানাহারের সংযমের মাসে উপভাষের মাধ্যমে আল্লাহর নিকট অর্জনের মাসে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য আগুনের মতো দাউ দাউ করে। জ্বলে ওঠার কারণ কি?  আমাদের সমাজে ইফতার কেন পার্টিতে রূপান্তরিত হলো? এখন ইফতারের সমস্ত নূর থেকে বঞ্চিত হয় ।

আরও পড়ুন ঃ উত্তম মৃত্যুর আলামতসমূহ-শহিদী মৃত্যেু সমূহ-সৌভাগ্যবান মৃত্যেৃ সমূহ

কারণ যে ইফতার ছিল আল্লাহর নবীর একটি সুন্নাত আজ সে ইফতার হয়ে পড়েছে ভোজ অনুষ্ঠান। যেন সারাদিনের উপবাসের মূল্য এখন কড়াগন্ডায় উসূল করে নিতে হবে। স্ত্রী লোকদের অবস্থা আরও করুন। প্রায় প্রতিটি পরিবারে তাদের আসর থেকে মাগরিবের সময় চলে যায় ইফতারি তৈরিতে। এমন কি ইফতারের পূর্বে যে দোয়া কবুলের সময় তখন একটু দোয়া করার তাদের সময়ও হয় না। 

রোজাদার কে ইফতার করানো

হযরত যায়েদ ইবনে খালিদ রাঃ থেকে বর্ণিত,- রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি কোন রোজাদারকে ইফতার করাবে সে তার অনুরূপ প্রতিদান লাভ করবে। তবে রোজাদারের প্রতিদান থেকে বিন্দুমাত্র  হ্রাস করা হবে না। সুনানে তিরমিজি : ৮০৭

তাওবা ইস্তেগফার করা

আল্লাহ তায়ালা এই মাসে অসংখ্য জাহান্নামি কে মুক্তি দান করেন। যেমন রাসূলে কারীম ইরশাদ করেন, আল্লাহ এই মাসের প্রতি রাতে অসংখ্য জাহান্নামীকে মুক্তি দান করেন।মুসনাদে আহমদ:  ১৮৭৯৪

সুতরাং আমাদের কর্তব্য তাওবা ইস্তেগফার করা । কেননা যে ক্ষমা চায় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন। অন্য কাউকে নয় ।

দোয়া করা

রোজার মাধ্যমে মুমিন বান্দা আল্লাহর এতটা নৈকট্য অর্জন করে যে, যতক্ষণ সে রোজা অবস্থায় অথবা রোজার প্রস্তুতি অবস্থায় থাকে অর্থাৎ রাত দিন ততক্ষণ তার কোন দোয়া ফেরত দেওয়া হয় না। সমস্ত দোয়া কবুল করা হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম ইরশাদ করেন,- প্রত্যেক মুসলিম রমজানে যে দোয়া করে তা কবুল করা হয়। রমজান মাস দোয়া কবুলের মাস। তাই আমাদের উচিত বেশি বেশি দোয়া করা ।

ইফতারের আগ মুহূর্তে দোয়া করা

ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়। আব্দুল্লাহ ইবনে মুলাইকা বলেন , আমি আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ থেকে শুনেছি। তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ইফতারের সময় রোজাদার একটি দোয়া কবুল করা হয়।

আব্দুল্লাহ ইবনে মুলাইকে বলেন, আমি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমরকে ইফতারের সময় এ দোয়া করতে শুনেছি, ”আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিরাহমাতিকা আল্লাতি  ওসিআত কুল্লা  শায়ইন আন  তাগফিরল “

অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমি তোমার দরবারে সেই রহমতের উসিলায় আবেদন করছি। যা সকল বস্তুকে বেষ্টন করে রেখেরছ, তুমি আমাকে মাফ করে দাও। রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লামও ইফতারের সময় আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন।- সুনানে ইবনে মাজাহ: হাদীস নং ১৭৫৩

রমজান মাসের  বর্জনীয়  বিষয়সমূহ

গুনাহ থেকে সর্বাবস্থায় বেঁচে থাকতে হবে। তবে রোজার অবস্থায় তো আরো বেশি জরুরী । কারণ গুনাহের কারণে রোজার ফলাফল বরবাদ হয়ে যায় । রোজার ফরজ আদায় হয়ে যায় কিন্তু রোজার নূর ও রুহানিয়াত একেবারে বরবাদ হয়ে যায়।  আমাদের  উচিত রোজার খারাফ বিষয়সমূহ বর্জন করা।

অশ্লীল কথা-বার্তা বন্ধ করতে হবে

অশ্লীল কথা-বার্তা বন্ধ করতে হবে এবং শোরগোল বন্ধ করতে হবে । রোজা অবস্থায় অশ্লীল কথাবার্তা ঝগড়া  বিবাদ থেকে বিরত থাকা জরুরী। হাদিসে এসেছে, তোমাদের কেউ যখন রোজা অবস্থায় থাকে তখন যেন অশ্লীল কথা না বলে এবং  শোরগোল না করে । আর কেউ যদি তার সঙ্গে ঝগড়া করে গালি দেয় তাহলে সে যেন শুধু বলে দেয় আমি তো রোজাদার অর্থাৎ তোমার সাথে বিবাদ করার সুযোগ নেই।

অপর এক হাদিসে বলেছেন, কত রোজাদার এমন আছে , রোজা অবস্থায় অশ্লীল কথা ও কর্ম থেকে বিরত না থাকার ফলে খুদা পিপাসা ছাড়া সে আর কিছুই লাভ করতে পারে না। অনেক রাত জাগরণকারী এমন আছে যে রাত্রি জাগরণ থেকে জেগে থাকার কষ্ট ছাড়া আর কিছুই হয় না।  

মিথ্যা কথা না বলা 

করেছেন যে রোজা রেখেছে অথচ মিথ্যাচার করেনি তার এই কৃতি বানানোর বর্জনের কোন প্রয়োজন আল্লাহর নেই সহীহ বুখারী১৯০৩

অনর্থক কথা বা কাজ না করা হযরত আবু হুরায়রা রাঃ বলেন রাসূল করেছেন রোজা শুধু পানাহার বর্জন রোজা শুধু পানাহার বর্জন করার নাম নয় বরং রোজা হল অনর্থকতা ও কাজ এবং অশ্লীল কথা বর্জন করা।

গীবত না করা 

হাদীস শরীফে এসেছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর দরবারে দুজন মহিলা উপস্থিত হয়ে দরজার বাইরে থেকে অভিযোগ করল। রোজার কারণে তাদের খুব কষ্ট হচ্ছে । পিপাসার কারণে প্রাণ উস্তাগত প্রায়। এ অবস্থায় শুনে তিনি লোক মারফতে তাদের বমি করার আদেশ দিলেন। তাদের রক্ত বের হচ্ছে, সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, তখন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বললেন, এরা হালাল করে রোজা রেখেছে কিন্তু রোজা অবস্থায় হারাম খেয়েছে অর্থাৎ মানুষের গীবত করেছে। আর গীবত করার অর্থ হল মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া ।মুসনাদে আহমাদ: ২৩৬৫৩

এছাড়া আরো যেসব গুনাহ রয়েছে যেমন, ঘুষ,সুদ,হারাম উপার্জন, বাটপারি,চোগলখুরি,ওজনে কম দেওয়া,মানুষ কে ধোকা দেওয়া, কারো উপর জুলুম করা ,মানুষ কে ঠকানো সহ নানা অপকর্ম করলেও রোযা সঠিক ভাবে পালন হয় না। আল্রাহ খুশি হোন না এবং আল্লাহ তাহালা রোযাদারের দোয়া কবুল করেন না।

এই হাদিস দ্বারা বুঝা যায়, গীবত ও অন্যান্য গুনাহ দ্বারা রোজার অনেক কষ্ট হয়।  এ কারণেই দেখা যায় আল্লাহর নেক বান্দারা রোজার তেমন কষ্ট অনুভব করেন না বরং তারা অনেক আর্থিক এমনকি দৈহিক শান্তি লাভ করে থাকেন। পক্ষান্তরে যারা গীবত করে এবং বিভিন্ন থাকে তারা রোজার কারণে অল্পতে কাহিল হয়ে পড়েন। বিভিন্ন বাহানা করে রোজা থেকে রেহাই পেতে চায়। আল্লাহ তা'আলা আমাদের তার সন্তুষ্টি মোতাবেক রমজান কাটানোর তৌফিক দান করুন। আমীন 



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url