প্রতিদিনের নেক আমলের দোয়া - ছোট ছোট আমলের ফজিলত

প্রত্যেক প্রাণীকে একদিন মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে। সে হিসেবে মানুষ তার বাহিরে নয়। তবে সৃষ্টির কূল মানুষের ব্যাপারটা অন্য প্রাণীদের চেয়ে ভিন্ন। মানুষকে দুনিয়ায় তার অতিবাহিত জিবনের হিসাব নিকাশ পরকালে দিতে হবে। যে যত ভালো আমল বা নেক কাজ করবে তার হিসাব তত সহজ হবে।
প্রতিদিনের নেক আমলের দোয়া
প্রতিদিনের নানান কাজে ব্যস্ত থাকায় আমরা আমলের কথা ভুলে যাই বা করার সময় থাকে না। আজ তেমনি কয়েকটি ছোট ছোট আমলের কথা আলোচনা করবো যা পালন করতে তেমন সময়ের প্রয়োজন পড়ে না এবং যার সওয়াব অনেক গুন বেশি।

পোস্ট সূচিপত্র 

যে আমলের বরকতে জাহান্নাম থেকে বের করে আনা হবে।

নবী কারীম (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যাক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলবে আর তার অন্তরে একটি যব পরিমাণ নেকি থাকবে, তাকে জাহান্নাম থেকে বের করে আনা হবে আবার  যে ব্যাক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলবে আর তার অন্তরে একটি  গম পরিমাণ নেকি থাকবে, তাকে জাহান্নাম অণু পরিমাণ নেকি থাকবে, তাকেও জাহান্নাম থেকে বের করে আনা হবে । (সহিহ বুখারী,৪৪)

জাহান্নাম থেকে বাচার দোয়া

রাসূল (সাঃ) বলেন, যে ব্যাক্তি মাগরিবের নামাযের সালাম ফেরানোর পর কারো সঙ্গে কথা বলার আগে নিম্মোক্ত দোয়াটি সাতবার পড়বে, এবং যদি সে ওই রাতেই মারা যায় তাহলে তার জন্য জাাহান্নাম থেকে মুক্তির ফায়সালা লিখে দেয়া হবে। ফজরের নামাজের পরও এ দোয়াটি একই নিয়মে যদি সাতবার পড়া হয় আর ওই দিন যদি সে মারা যায় তাহলে তার জন্য জাহান্নাম থেকে মুক্তির ফায়সালা লিখে দেয়া হবে।

দোয়াটি হচ্ছেঃ- বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আজিরনি মিনান নার। অর্থ্যাৎ : হে আল্লাহ! আমাকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দাও। ( আবু দাউদ, ৫০৮১ সহিহ)

আরও পড়ুনঃ জীবন বদলে দিতে পারে, প্রতিদিনের কিছু নেক আমলের দোয়। ( পর্ব: )

শিরক থেকে বেচে থাকার দোয়া

রাসূল ( সাঃ) থেকে বর্ণিত, নিম্মোক্ত দোয়াটি পড়লে আল্লাহ শিরক থেকে হেফাজত করবেন। দোয়াটি হচ্ছেঃ বাংলা উচ্চারণ:- আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা আন উশরিকা বিকা ওয়া আনা আ” লামু , ওয়া আছতাগফিরুকা লিমা লা আ’ লামু।

অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি সজ্ঞানে তোমার সাথে শিরক করা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই এবং যা আমার অজ্ঞাত তা থেকেও তোমার কাছে ক্ষমা চাই। ( আদাবুল মুফরাদ, ৭২১ সহিহ)

জান্নাত ওয়াজিব হওয়ার দোয়া

রাসূল (সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি এই দোয়া পড়বে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে। দোয়াটি হচ্ছেঃ

 বাংলা উচ্চারণ: রদিতু বিল্লাহি রব্বাও ওবিল ইছলামি দ্বীনাও ওবি মুহাম্মাদিন রছূলা। 

অর্থঃ- আমি আল্লাহকে রব্ব, ইসলামকে দ্বীন এবং মুহাম্মদ সা. কে রসূল হিসেবে সন্তুষ্টচিত্তে মেনে নিয়েছি। ( আবু দাউদ, ১৫২৯ সহিহ)

আজানের জবাব দিন, জান্নাতে প্রবেশ করুন।

রাসূল সা. বলেন, আজানের সময় মুয়াজ্জিন  বাক্যগুলো বলে আজান দেয়; যে ব্যক্তি হুবুহু তাই বলে জবাব দেয; শুধু হাইয়া আলাছ ছলাহ ও হাইয়া আলাল ফালাহ বলার সময় লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইন্না বিল্লাহ বলে জবাব দেয়। সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। ( সহিহ মুসলিম, ৭৩৬ )

অজুর পরে যে দোয়া পড়লে জান্নাতের আটটি দরজা খুলে যায়

রাসূল (সাঃ) বলেন,  যে ব্যাক্তি উত্তমরূপে অজু করার পর ”আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়ারাসূলুহু” বলবে তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজাই খুলে দেওয়া হবে। সে যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা  প্র্রবেশ করতে পারবে। ( সহিহ মুসলিম, ৪৪১)

খাবার পর যে আমল করলে সারাদিন রোযা রাখার ছওয়াব পাওয়া যায়

রাসূল (সাঃ) বলেন, খাবার খেয়ে ( আলহামদুলিল্লাহ বলে) আল্লাহর শুকরিয়া আদায়াকারী বান্দা রোজাদার ব্যক্তির মতো ছওয়াব পায়। ( ইবনে মাজাহ, ১৭৬৫)

কেয়ামতের দিন যার আমল সবচেয়ে বেশি হবে

রাসূল (সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি সকালে ও সন্ধ্যায় ছুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি ১০০ বার পড়বে, তার চেয়ে বেশি আমল নিয়ে কেয়ামতে কেউ করবে। ( সহিহ মুসলিম, ৬৭৩৬)

চারটি জিকিরের বিষ্ময়কর ফযিলত

হাদিসে ছুবহানাল্লাহু, ওয়ালহামদু লিল্লাহ, ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার এই চারটি জিকিরের অনেক ফযিলত বর্ণিত হয়েছে।

১. রাসূল সা. বলেন, এই বাক্যগুলো পড়লে আল্লাহর রাস্তায় দান করার ছওয়াব লাভ হয়। 

(সহিহ মুসলিম, ২২১৯)

২. রাসূল সা. বলেন, কেয়ামতের দিন আমলনামায় এই বাক্যগুলো সবচেয়ে ভারী হবে।

(মুসনাদে আহমদ, ৩/৪৪৩ সহিহ)

৩. রাসূল সা. বলেন,  এই বাক্যগুলো জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির ঢাল। 

( মুসতাদরাকে হাকেম, ১/৭২৫ )

৪. রাসূল সা. বলেন, গাছের ডালে ঝাকি দিলে যেমন, পাতা ঝরে যায় তেমনি এই বাক্যগুলো পড়লে বান্দার গুনাহ ঝরে পড়ে যায। (মুসনাদে আহমদ, ৩/১৫২ সহিত ) 

দুই মিনিটে চার খতম কোরআন ও জান্নাতে বাড়ি বানানোর সহজ আমল

  • সূরা ইখলাস (কুল হুওয়াল্লাহু) তিন বার পড়লে এক খতম কোরআন শরীফ পড়ার সওয়াব পাওয়া যায়। ( সহিহ বুখারী , ৫০১৫)
  • সূরা ইখলাস ( কুল হুয়াল্লাহু) ১০ বার পাঠ করলে তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর বানানো হবে।(মুসনাদে আহমদ,৩/৪৩৭ সহিহ)
  • মাত্র ২/৩ মিনিটে সুরা ইখলাস ১২ বার পড়া যায়।  সুতরাং সূরা ইখলাস ১২ বার পড়লে চার বার কোরআন শরীফ পড়ার সওয়াব পাওয়া যায় এবং জান্নাতে একটি বাড়ির মালিক হওয়া যায়। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url