আমাদের নাকে কিভাবে গন্ধ আসে-আকাশ কেন নীল দেখায়
আমাদের প্রতিদিনে জীবনে বিজ্ঞানের নানান বিষয় ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। এসব বিষয়গুলোর বেশিরভাগ রহস্য আমাদের অজানা থেকে যায়, অথচ বিষয় গুলো প্রতিনিয়ত আমাদের সাথে ঘটতে থাকে। অনেকে আবার এসব বিষয়গুলো জানতে বেশ কৌতুহল কিন্ত তেমন মাধ্যম বা উপায় নেই বলে প্রশ্নগুলো সব সময় মাথায় ঘুরপাক খাায়। আজকের টপিক্স জুড়ে তেমনি কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে , চলুন দেখা নেওয়া যাক।
পোস্ট সূচিপত্র
বেলুন আকাশে উড়ে কেন ?
গ্যাস বেলুন ফোলানোর ক্ষেত্রে বেলুনের ভেতরে দেওয়া হয় শুধু হিলিয়াম গ্যাস। এই হিলিয়াম গ্যাস বাতাসের চেয়ে হালকা। প্রতি লিটার বাতাসের চেয়ে হালকা । প্রতি লিটার বাতাসের ওজন প্রায় ১.২৫ গ্রাম, যেখানে প্রতি লিটার হিলিয়াম গ্যাসের ওজন মাত্র ০.১৮ গ্রাম। ফলে হিলিয়াম গ্যাস ভরা বেলুনের বাতাসের চেয়ে হালকা হয়। তাই গ্যাস ভরা বেলুন বাতাসের চেয়ে হালকা হয়। তাই গ্যাস ভর্তি থাকলে বেলুন আকাশে উড়তে থাকে।
আমরা কীভাবে গন্ধ অনুভব করি ?
আসলে গন্ধ হচ্ছে কিছু উদ্বায়ী রাসায়নিক পদাথ। বাষ্পীভুত বা গ্যাসীয় অনু। আমরা তখনই কোন বস্তুর গন্ধ বুঝতে পরি যখন ওই পদার্থ থেকে কিছু স্পেসিফিক উদ্বায়ী পদার্থ ব্যাপন প্রক্রিয়ায় আমাদের নাকের অলফ্যাক্টরী নিউরনে এসে পৌছায়। অলফ্যাক্টরি নিউরনে এই ধরনের উদ্বায়ী পদার্থের জন্য ভিন্ন ভিন্ন স্পেসিফিক রিসেপ্টর থাকে এবং যখনই কোন নির্দিষ্ট পদার্থ এসে সেই রিসেপ্টরে যুক্ত হয তখনই নিউরনগুলি আমাদের মস্তিষ্কে বিশেষ সংকেত পৌছে দেয। ফলে আমরা বিশেষ গন্ধ অনুভব করি।
সামুদ্রিক শঙ্খে কান পাতলে সমুদ্রের গর্জন শোনা যায় কেন ?
সাগরের গর্জন আমরা প্রায়ই বলে থাকি কিন্ত তা কিভাবে আদৌ হয়তো আমরা শুনিনি। তবে সামুদ্রিক শঙ্খের মধ্যে অনেক খাচ কাটা বাক থাকে। যার উপর দিয়ে বায়ু প্রবাহিত হলে প্রসারিত হয়ে শব্দ তরঙ্গের সৃষ্টি করে এবং এটা অনেকটা সমুদ্রের গর্জনের মতো শোনা যায়। তাই সামুদ্রিক শঙ্খে কান পাতলে সমুদ্রের গর্জন শোনা যায়।
আকাশ নীল দেখায় কেন ?
আমাদের মাথার উপরে বিশাল এই মহাশূন্যকে আমরা নীল আকাশ বলে থাকি । আসলে আলোর বিক্ষেপণের কারনে আকাশ নীল দেখায়। কোন কণিকার ওপর আলো পড়লে সেই কণিকা আলোকে বিভিন্ন দিকে ছড়িযে দেয়, যাকে আলোর বিক্ষেপণ বলে। যে আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য যত কম, সেই আলোর বিক্ষেপণ তত বেশি হয়। নীল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম, তাই আকাশে এই আলোর বিক্ষেপণ বেশি হয় এবং আকাশ নীল দেখায় ।
মাটির কলসির পানি ঠান্ডা হয় কেন ?
মাটির কলসিতে পানি ঠান্ডা হওয়ার কারণ বাষ্পীভবন । যখন কোন তরল পদার্থ বাষ্পীভুত হয় তখন তার উষ্ণতা হ্রাস পায়। তাপ হারানোর কারনে তরল পদার্থের উষ্ণতা কমে যায়। মাটির কলসি বানানোর সময় মাটির সঙ্গে খানিকটা বালি মেশানো হয় এবং মাটির কলসির গায়ে অসংখ্য ছোট ছোট ছিদ্র থাকে। খালি চোখে এই ছিদ্রগুলো দেখা যায় না। ওই ছিদ্রগুলো দিয়ে পানি আস্তে আস্তে বাষ্প হয়ে উড়ে যায়। ফলে মাটির কলসি ঠান্ডা থাকে। অপরদিকে পিতলের কলসির গায়ে কোনো ছিদ্র থাকে না। এ জন্য পানি বাষ্পীভুত হতে পারে না। এ কারনে পিতলের কলসির পানি কলসির মতো ঠান্ডা হয় না।
লিপইয়ার (Leap Year) কাকে বলে এবং লিপইয়ারে ১ দিন বেশি কেন ?
যে বৎসর ৩৬৬ দিনের হয় সে বৎসরকেই লিপইয়ার বলা হয়। প্রতি চার বৎসর অন্তর অন্তর লিপইয়ার হয়। পৃথিবী সূর্যের চার দিকে ৩৬৫ দিন ৬ ঘন্টায় একবার ঘুরে আসে। কিন্ত আমরা ৩৬৫ দিনে ১ বৎসর হিসেব করে থাকি। সুতরাং প্রতি চার বৎসর অন্তর ফেব্রয়ারী মাসের সাথে ১ দিন যোগ করে পাই ৬**=২৪ ঘন্টার সমতা রক্ষা করা হয়। তাই প্রতি লিপইয়ারে ১ দিন বৃদ্ধি পায়।
কৃত্রিম উপাযে কিভাবে বৃষ্টিপাত ঘটানো যায় ?
মেঘের জলীয় বাষ্প জমিয়ে বৃষ্টির বিন্দু রুপে পরিণত হতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধুলিকণার প্রয়োজন। ধুলিকণার চতুর্দিকে সুক্ষ্ম বাষ্পের কণাগুলো জমা হয়ে পানির ফোটাতে পরিণত হয় এবং এই ফোটা ভারী বলে বৃষ্টি হিসেবে পতিত হয। বর্তমানে সিলভার আয়োডাইড এবং মাঝে মাঝে লবণের কণার চতুর্দিকে বাষ্প জমিয়ে বৃষ্টির ফোটা গঠন করে। এই ভাবে কৃত্রিম উপায়ে বৃষ্টিপাত ঘটান সম্ভব সম্ভব হয়।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url