কিডনিতে পাথর কেন হয় | কিডনিতে পাথর হলে করনীয়

ভুলভাবে জীবন যাপন, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, খাওয়া-দাওয়া ও পানি পানে অনিয়মের প্রভাব পড়ে কিডনির উপর। সাধারনত কিডনির সমস্যা হচ্ছে কিনা বা কিডনিতে পাথর জমছে কিনা তা বুঝতে শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পানি পানের পরিমাণ ঠিক আছে কি না ,কোমর বা তলপেটে কোন ব্যাথা হচ্ছে কি না ,মুত্রত্যাগের সময় কোনো জ্বালা বা সমস্যা হচ্ছে কি না এগুলোর দিকেই খেয়াল রাখতে হবে আমাদের।

কিডনিতে পাথর ! কেন কিডনিতে পাথর হয় ! কিডনি’র পাথর  কতটা ক্ষতিকর!

তবে কিডনির কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না বা অজান্তেই পাথর জমছে কি না তা টের পেতে গেলে এটুকু সাবধানাতই যথেষ্ট নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিডনিতে পাথর কোথায় রয়েছে, কতগুলো রয়েছে এ সবের ওপর এই অসুখের লক্ষন নির্ভর করে ।

যদি খুব ছোট আকারের অল্প কয়েকটা পাথর থাকে, তাহলে কোন লক্ষন নাও বুঝা যেতে পারে।  তবে সংখ্যায় বেশি হরে বা আকারে বড় হলে অবশ্যই স্পষ্ট কিছু উপসর্গ থাকে। কেবল সাধারন কয়েকটা লক্ষনের বাইরেও কিছু উপসর্গ থাকে।

আরও পড়ুন:-  কিডনি’র বিভিন্ন রোগ ও চিকিৎসা।

লক্ষন জানা থাকলে এই অসুখ নিয়ে আগেই সচেতন হওয়া যায়। এতে শারীরিক কষ্ট ও কিছুটা কমে যায়। আবার দ্রুত চিকিৎসা শুরু হওয়ায় অস্ত্রোপাচার এড়ানোও যায় অনেক সময়। 

পোস্ট সূচিপত্র:

     কিডনির পাথর কেন হয়

    কিডনিতে পাথর তৈরি কারণ জানার জন্য অনেক গবেষণা হয়েছে এবং চলছে । সাম্প্রতিক ধারণা হলো প্রস্রাবের অত্যাধিক ঘন হলে পাথরের কনা বা ক্রিস্টাল তৈরি হয়। এই অবস্থা সৃষ্টি হয় যদি শরীর থেকে প্রতিনিয়ত পানি কমে যায় (ডিহাইড্রেশন)।

    পাথর তৈরীর প্রধান কারণ ডিহাইড্রেশন। যারা গরম আবহাওয়ায় কাজ করেন এবং পর্যাপ্ত পানি পান করেন না, তাদের শরীরে পানির পরিমাণ কমে পাথর তৈরির আশঙ্কা থাকে বেশি। তাই মরুভূমিতে, মধ্যপ্রাচ্যের গরম দেশগুলোতে, এমনকি আমাদের এই উপমহাদেশের কিছু কিছু স্থানে প্রচুর কিডনি পাথরের রোগী পাওয়া যায়। 

    শরীরের কিছু খনিজ উপাদান, যেগুলো পাথর তৈরিতে বাধা দেয় (ইউরিনারি স্টোন ইনিবিটরস) সেগুলো প্রস্রাবে কমে গেলেও কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যেমন প্রস্রাবে সাইট্রিক, ম্যাগনেসিয়াম ও জিংকের পরিমাণ কমে গেলে।

    আবার শরীরে এমন কিছু উপাদান আছে যেগুলোর পরিমাণ প্রস্রাবে বেড়ে গেলে কিডনিতে পাথর তৈরি হতে পারে। যেমন:- প্রস্রাবে ক্যালসিয়াম ও ইউরিক এসিড বেশি পরিমাণে নির্গত হওয়া। যেকোনো কারণে মূত্র প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে এবং মূত্রতন্ত্রের জন্মগত কোন সমস্যা থাকলেও পাথর তৈরি আশঙ্কা থাকে। বিভিন্ন মেটাবলিক কারণ যেমন: প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থির অত্যাধিক কার্যকারিতা বা টিউমার রক্তে ও প্রস্রাবে ক্যালসিয়াম বাড়িয়ে দিয়ে থাকে।

    আর এক্ষেত্রে দুই দিকের কিডনিতেই অনেক পাথর তৈরি হয়। শিশুদের জন্মগত মেটাবলিক কারন, যেমন- সিসটিনিউনিরিয়া ও জ্যানথিনিউরিয়া কিডনি পাথরের কারণ। পাথর সাধারণত কিডনিতে তৈরি হয়ে প্রস্রাবের নালি ও মুত্রথলিতে নেমে আসে।

    কিডনি’র পাথরের প্রকারভেদ

    কিডনির সব পাথরই কিন্ত এক রকম না। রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে কয়েক ধরণের পাথর পাওয়া যায়। 

    ক্যালসিয়াম অক্সালেট: সবচেয়ে বেশি প্রায় ৬০-৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে পাওয়া যায়। এক্স-রে করলে ধরা পড়ে।

    ট্রিপল ফসফেট: ( অ্যামেনিয়াম-ম্যাগনেশিয়াম-ক্যালসিয়াম ফসফেট): সংক্রমণ হলে সাধারণত এ জাতীয় পাথর হয় ক্ষারীয় ( অ্যালকোলাইন) প্রস্রাবে।

    মিক্সড: ক্যালসিয়াম অক্সালেট ও ফসফেটের মিশ্রণ।

    ইউরিক অ্যাসিড ষ্টোন: সাধারণত এক্স-রেতে দেখা যায় না। গাউট বা বাতজনিত রোগীদের এই পাথর থাকতে পারে।

    কিডনিতে পাথর জমার বিষয়টি বোঝার ‍উপায়

    কিডনির সমস্যা হলে সবার আগে প্রভাব পড়বে  প্রস্রাবে। রং বদল হলে খেয়াল রাখুন। লালচে বা বাদামি প্রস্রাবে পাথর জমলেও হয। সে কারনে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন। অনেকের ক্ষেত্রেই সমস্যা জানান দেয় কোমরের ব্যাথা দিয়ে। যদিও  নানা কারনে কোমর ও তলপেটে ব্যাথা হতে পারে। তবে প্রস্রাবে জ্বালা, রঙ বদলে যাওয়ার সঙ্গে কোমর ও তলপেটে ব্যাথা থাকলে সচেতেন হেোন। 

    জ্বর ঘুরেফিরে আসা কারো কারো ক্ষেত্রে। সঙ্গে বমি হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। প্রায়ই মূত্রথলি বা প্রস্রাবে সংক্রমণ হতে পারে। তাহলে প্রথম থেকে সতর্ক হয়ে চিকিৎসা করান। 

    লক্ষন দেখা দেওয়ার আগেই কিডনির যত্ন নিতে প্রতি তিন মাস পর সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কিছু রুটিন পরীক্ষা করান। সঙ্গে শরীরের প্রয়োজন ও চাহিদা অনুযায়ী পানি পান করুন নিয়ম করে।

    কিডনির পাথর হওয়ার কারন

    কিডনিতে পাথর তৈরির কারণ জানার জন্য অনেক গবেষণা হয়েছে এবং আজও চলছে কিন্ত কিডনিতে পাথর জমা হওয়া বা তৈরি হওয়ার প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায় নি। তবে কিছু কিছু বিষয় রয়েছে যা কিডনিতে পাথর তৈরির কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। যেমন;-

    • খাবারে অধিক লবণ।
    • দৈনিক অল্প পানি পান।
    • কম ফলফলাদি ও শাকসবজি খাওয়া।
    • বেশি বা খুব কম ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়া।
    • কিডনিতে বারবার সংক্রমণ এবং যথোপুযুক্ত চিকিৎসা গ্রহন না করা।
    • যারা ক্যালসিয়াম জাতীয় ট্যাবলেট প্রচুর পরিমাণে খেয়ে থাকে তাদেরও পাথর হওয়ার আশংকা।
    • যেসব লোকেরা ইনফ্লামেটরি বাওয়েল  রোগ থাকে, তাদের কিডনির রোগ হওয়ার ঝুকি বেশি থাকে।
    • কিডনিতে পাথর হওয়ার অন্যতম কারণ হলো লাল মাংস যেমন- গরু ও খাসির মাংস এবং পোলট্রির মাংস বেশি বেশি খাওয়া।
    • অনিয়ন্ত্রিত উচ্চারক্তচাপ অথবা মূত্রাশয়ে প্রদাহ কিংবা বাতের ব্যথার উপযুক্ত চিকিৎসা না করালে কিডনিতে পাথর হতে পারে।
    • টপিরামেট জাতীয় ওষুধ কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুকি বাড়ায়। এগুলো সাধারণত মাইগ্রেনের রোগে ব্যবহার করা হয়।
    • অতিরিক্ত অক্সালেট জাতীয় শাকসবজি যেমন- পুই শাক, পালং শাক, বিট ইত্যাদি বেশি পরিমাণে খেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে পরিমিত পরিমাণে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

    কিডনিতে পাথরের লক্ষণ

    অনেক ক্ষেত্রেই কিডনিতে পাথরের কোনো লক্ষন না-ও থাকতে পারে। মেরুদন্ডে ব্যথার জন্য নিয়মিত চেকআপের সময় অনেক সময় ধরা পড়ে। কিডনিতে পাথরের জন্য ব্যাথা হলে ওপরের পেটের অথবা নিচের পিঠের ডানে বা বায়ে মাঝে মৃদু ব্যথা হতে পারে।

    আরও পড়ুন:- কিডনি’র পাথর থেকে মুক্তির ৭টি উপায় জেনে নিন।

    লাল প্রস্রাব বা প্রস্রাবে হালকা রক্ত যাওয়া আরেকটি লক্ষণ। পাথর যদি প্রস্রাবের নালিতে নেমে আসে তাহলে ওপরের পেট-পিঠ থেকে কুচকির দিকে প্রচন্ড ব্যাথা হয় এবং সঙ্গে বমি,জ্বর ইত্যাদি থাকে। পাথর মুত্রনালি বা ইউরেটারে আটকে গেলে কিডনি ফুলে যায়। অনেক সময় ইউরোসেপসিস বা মারাত্মক সংক্রমণ হযে জীবনের ঝুকি দেখা দিতে পারে। 

    দুর্গন্ধ ও ফেনার মতন প্রস্রাব। কিডনিতে পাথর বিকাশের  ক্ষেত্রে ডিহােইড্রেশনের অবদান অনেক। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা কিডনিতে পাথর নিরাময়ে সহায়তা করতে পারে। এসব ক্ষেত্রে জরুরিভাবে  ইউরোলজিষ্টের পরামর্শ নিয়ে পাথর বের করতে হবে, শিরার মাধ্যমে অ্যান্টিবায়োটিক নিতে হবে।

    কিডনি ও মূত্রতন্ত্রের পাথর শনাক্ত করার নিয়ম

    মূত্রতন্ত্রের পাথরের রোগীদের প্রস্রাব পরিক্ষা করলে লোহিতকণিকা, পাস-সেল বা পাথরের ক্রেষ্টাল পাওয়া যেতে পারে। পেটের এক্স-রে করলে প্রায় ৯০ শতাংশ পাথর দেখা যায়। তবে কিডনির খুব ছোট পাথর বা মূত্রনালির পাথর শনাক্ত করতে হলে সিটি স্ক্যান প্রয়োজন হয়। আলট্রাসনোগ্রাম করলেও কিডনি ও মূত্রথলির পাথর ধরা পড়ে।

    কিডনির পাথর প্রতিরোধের উপায়

    খাদ্যভ্যাসের কিছু পরিবর্তন ও পর্যাপ্ত পানি পান করা কিডনি পাথর প্রতিরোধের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিডনি পাথর বের করলেও আবার হওয়ার আশংকা থাকে। তাই যাদের একবার পাথর হয়েছে ,তাদের জন্য কিছু পরামর্শ মেনে চলতে হবে।

    • সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ হলো পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে যাতে শরীর শুষ্ক  না থাকে। কতটুকু পানি আপনার জন্য পর্যাপ্ত, তা নির্ভর করে আপনার কাজের ধরন, অবস্থান ও জলবায়ুর ওপর। যারা বাইরে মাঠে কাজ করেন তাদের পানির প্রয়োজন নিশ্চিতভাবে ঘরে এসির ভেতর অবস্থানরত মানুষের চেয়ে বেশি।
    তেমনি গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে বা গ্রীষ্মকালে, শীতপ্রধান অঞ্চলে বা শীতকালে পানির প্রয়োজন বেশি হবে। যাদের আগে পাথর হয়েছে তাদের বেলায় সাধারণত আমরা বলি এমন পরিমাণ পানি ও তরল পান করবেন, যাতে প্রস্রাব ২৪ ঘন্টায় ২ লিটারের মতো হয় অথবা প্রস্রাব উচ্চবর্ণের না হয়। এটি দেখতে যেন অনেকটা পানির মতোই হয়। আপনার অবস্থানভেদে ২-৪ লিটার পান করার প্রয়োজন হতে পারে।
    • কোনো অসুখের কারনে প্রস্রাব প্রবাহে বাধা অথবা সংক্রমণ থাকলে তার চিকিৎসা করতে হবে।
    • খাদ্যে লবণের পরিমাণ কমাতে হবে।
    • মূত্রতন্ত্র বা কিডনি থেকে পাথর বের করার পর আমরা পাথরের রাসায়নিক পরিক্ষা করে থাকি। ক্যালসিয়াম অক্সালেট পাথরের ক্ষেত্রে যেসব খাদ্যে অক্সালেট বেশি থাকে তা কম খেতে হবে। যেমন- পালংশাক, স্ট্রবেরি,মাখন,চকলেট,দুগ্ধজাতীয় খাবার। প্র্রস্রাবে অ্যাসিডোসিস কমায়। অজ্ঞাত কারণে প্রস্রাবে ক্যালসিয়াম বেড়ে গেলে মূত্রবর্ধক থায়াজাইড জাতীয় ওষুধ দেওয়া যেতে পারে। অ্যালোপিউরিনল ওষুধ অনেক ক্ষেত্রে দেওয়া যেতে পারে।
    • মেটাবলিক সমস্যার জন্য পাথর হলে তার চিকিৎসা করতে হবে। প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থির অতিরিক্ত কার্যকারিতা বা টিউমার থাকলে তার শল্যচিকিৎসা করাতে হবে।
    • অতিরিক্ত পরিমাণে ভিটামিন সি (যা শরীরে অক্সালেটে পরিণত হয়) ও ভিটামিন ডি (শরীরের ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বাড়ায়) খাওয়া পরিহার করত হবে। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন শরীরর জন্য ভালো।

    কিডনির পাথর প্রতিরোধে ঘরোয় কিছু উপায়

    • তুলসি পাতায় থাকা অ্যাসিটিক অ্যাসিড কিডনির পাথরকে ভেঙ্গে ফেলতে সাহায্য করে । প্রতিদিন অন্তত দুবার করে তুলসির রস খান। আর তুলসীর পাতা দিয়ে চা করেও পান করতে পারেন।
    • পাতি লেবুর রসে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড ক্যালসিয়ামজাত পাথর তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে এবং ছোট পাথরগুলোকে ভেঙ্গে বের করে। রোজ সকালে পানির সঙ্গে লেবুর রস মিশ্রিত করে পান করুন অথবা দিনের যেকোনো সময়ে লেবুর রস পান করুন।
    • ডালিম রসে থাকা অ্যন্টিঅক্সিডেন্ট কিডনিকে সুস্থ রাখতে এবং পাথর ও অন্যান্য টক্সিনকে দূর করতে সাহায্য করে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সারাদিন কতবার এটি পান করবেন তা ঠিক করুন।
    • আপেল সিডার ভিনিগারে থাকা অ্যাসিটিক অ্যসিড কিডনিকে পাথর দূর করে এবং ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে। আপেল সিডার ভিনিগারের সঙ্গে দুই টেবিল চামচ পানি মিশিয়ে পান করুন। তবে একদিনে ১৬ চামচের বেশি খাবেন না।
    • মেথি বীজ কিডনিতে পাথর প্রতিরোধ ও চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, বীজগুলো কিডনিতে জমাকৃত পাথর হ্রাস করে ও কিডনির পাথর প্রতিরোধ করে। এক কাপ ফোটানো জলে ১ থেকে ২ চামচ শুকানো মেথি বীজ দিন। এটি প্রতিদিন পান করুন।
    • কালিজিরা বীজ একটি গবেষনা অনুযায়ী, কালিজিরার বীজ কিডনিতে ক্যালসিয়াম অক্সালেট ষ্টোন গঠনে উল্লেখযোগ্যভাবে বাধা দেয়। ২৫০ এম এল গরম পানিতে হাফ চা চামচ শুকনো কালিজিরা বীজ দিন। এটি দিনে দু’বার পান করুন। তবে এগুলো ব্যবহারের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।

    কিডনি’র পাথরের চিকিৎসা

    কিডনির অবস্থানে ব্যাথা এবং রক্তবর্ণের প্রস্রাব হলে চিকিৎসকরা সাধারণত দুটো সম্ভাবনার কথা চিন্তা করেন। একটি হল কিডনির ইনফেকশন, অন্যটি কিডনিতে পাথর। তাই কিডনির এক্সরে , আল্টাসনোগ্রাম এবং প্রস্রাবের নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কখনও পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি আর যথাযথ ওষুদ খেলেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

    তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে গেলে অস্ত্রপচারই একমাত্র উপায়। কখনও পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি আর যথাযথ ওষুধ খেলেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে গেলে অস্ত্রপচারই একমাত্র উপায়। কিডনিতে পাথর হলেই অপারেশন করতে হয় এমন ধারণা ঠিক নয়। চিকিৎসা নির্ভর করে পাথরের অবস্থান, আকার, ধরণ, কিডনির কার্যকারিতা এবং প্রস্রাবের পথে প্রতিবন্ধকতার ওপর। 

    ছোট অবস্থায় ধরা পড়লে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথানাশক ওষুধ সেবন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করার মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। কারন ছোট আকৃতির পাথর সাধারণত প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে যায়। কিছু ক্ষেত্রে পাথর অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচার বা যন্ত্রের মাধ্যমে পাথর ভেঙ্গে বের করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার না করে ওষুধ সেবন করার মাধ্যমে পাথর বের করা বা পাথর আর বড় না হওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। 

    অস্ত্রোপচারের পরও আবার পাথর হতে পারে। সে ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী ওষুধ সেবন করলে সুফল পাওয়া যেতে পারে। মনে রাখা প্রয়োজন, দৈনিক ৮-১০ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করলে শরীর থেকে উপযুক্ত পরিমাণে বর্জ্য পদার্থ প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে যায় এবং কিডনিতে পাথরে ঝুকি এবং জটিলতা কে কমিয়ে আনে।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url