পায়ের যত্নে করণীয়-পায়ের যত্নে প্রয়োজনীয় টিপস

পায়ের যত্ন নেওয়া অত্যান্ত জরুরী। পায়ের যত্ন নিলে পা দেখতে যেমন সুন্দর দেখায় ঠিক তেমনি আপনার ব্যাক্তিত্বকে বাড়িয়ে তুলে। একটা মানুষের স্মাটনেস অনেকটা তার পায়ের সৌন্দর্যের উপর নির্ভর করে। আজকের টপিক্স জুড়ে থাকবে কেবল পায়ের সৌন্দর্য  বাড়ানোর উপায় নিয়ে। 

পায়ের যত্নে করণীয়-পায়ের যত্নে প্রয়োজনীয় টিপস

ঘরে বসে কিছু সময় বের করে আপনি আপনার পায়ের যত্ন নিতে পারেন। শুষ্ক পা ফেটে যাওয়া গুরুতর একটি সমস্যা। এ ক্ষেত্রে পায়ের যত্ন নেওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন:- রোদে পোড়া দাগ থেকে মুক্তির উপায়।

পোস্ট সুচিপত্র:

 অ্যাসপিরিন ব্যবহার করুন:

৪-৬টি অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট গুড়ো করে নিন। এক চা চামচ লেবুর রস এবং কয়েক ফোটা পানির সঙ্গে এই গুড়ো মেশান ভালো করে। তারপর আক্রান্ত স্থানে এই পেস্টটি লাগিয়ে নিন। ৫-১০ মিনিট রেখে গরম পানি দিয়ে জায়গাটি ধুয়ে ফেলুন। যদিও এই পদ্ধতির কোনও বৈজ্ঞানিক সমর্থন নেই তবে এটি কার্যকর হতে পারে। 

এপসম লবণের ব্যবহার:

এপসম লবণ মুলত ম্যাগনেসিয়াম সালফেট নামক খনিজ যৌগের একটি স্ফটিক রূপ। পানিতে এপসম লবণ গুলে তাতে পা ভিজিয়ে রাখুন ৩০ মিনিট। তারপর পা এক্সফোলিয়েট করতে ফুট ব্রাশ বা পিউমিক স্টোন ব্যবহার করুন। এতে পায়ের মরা চামড়া অপসারণ হতে পারে এবং ত্বকের হাইড্রেশন বাড়াতে পারে।

স্কাবিং এর ব্যবহার:

মিনিট দশেক খুব হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পা ডুবিয়ে রাখুৃন। এরপর খুব ভালোভাবে পা মুছে নিয়ে এই স্কাব ব্যবহার করুন। মোটা দানার চিনি, লেবুর রস, খাটি নারিকেল তেল পরিমাণ মতো মিশিয়ে দুই পায়ে লাগিয়ে নিন। চিনি যতক্ষন না গলে যাচ্ছে ততক্ষন হালকা হাতে ঘষতে থাকুন। এরপর ধুয়ে ফেলুন।

প্যাকের ব্যবহার:

বেসনের সঙ্গে মধু, হলুদ বাটা, অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে পায়ে ও গোড়ালিতে লাগাবেন। ২০ মিনিট পর হালকা হাতে ঘষে ফেলুন। বেসনের সাথে অল্প দুধ বা দই, হলুদ, এক সাথে পেস্ট তৈরি করে পায়ে লাগিয়ে রাখুন। তারপর ভেজা হাতে আস্তে আস্তে মিশ্রনণটি পায়ে ঘষুন। আলাদা করে সাবান ব্যবহার করার দরকার নেই। বেসনের ই মিশ্রন ভালো ক্লিনজারের কাজ করে। পায়ে রুক্ষভাব কমানোর জন্য অল্প গোলাপজলের মধ্যে এক চামচ গ্লিসারিন দিয়ে ধেুয়ে ফেলুন।

অয়েল ম্যাসাজ করুন:

গোসলের সময় তেল ও পানি ব্যবহার করে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখা সম্ভব । গোসলের আগে পায়ে তেল মাখুৃন ত্বক নরম থাকবে। তিলের তেল বা যে কোনো  ভিজিটেবল অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। শীতের সময় সরষের তেল ত্বকের পক্ষে ভালো। সারা বছর পায়ের যত্নে তিলের তেল বেশ উপকারি। ম্যাসাজের আগে অল্প তেল গরম করে ব্যবহার করুন।

ময়েশ্চারাইজিং ব্যবহার করুন:

গোসলের পর ভেজা পায়ে বডি লোশন বা ক্রিম লাগান, ত্বকের ময়েশ্চার বজায় থাকবে। ভিটামিন ই সমৃদ্ধ লোশনও মাখতে পারেন। আমন্ড তেল ও অলিভ ওয়েল মিশিয়ে পায়ের পাতায় মাখুন। ভালো ক্রিম দিয়ে ম্যাসাজ করুন। গোড়ালিতে ক্রিম লাগান। তুলা বা পরিষ্কার কাপড় গোড়ালিতে ব্যান্ডেজ করুন।

পেডিকিওর ব্যবহার করুন:

প্রতি সপ্তাহে অন্তত একদিন ঘরে বসেই পেডিকিওর করুন। রাতে শোবার আগে উষ্ণ গরম পানিতে শ্যাম্পু ও লবণ মিশিয়ে ২০ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখুন। রোদে পোড়া পায়ের কালো দাগ দূর করতে পেডিকিওরের পর কচি শসার রস মাখুন। পায়ের ছোপ ছোপ দাগ দূর করতে ‍মূলার রস মালিস করতে পারেন। তার আগে পা গরম পানিতে  কিছুক্ষণ ঘষতে পারেন।

আরও পড়ুন:- চেহারায় বয়সের ছাপ নিয়ে বিভ্রান্ত ? জেনে নিন পরিত্রানের উপায়।

কিছু প্রয়োজনীয়  টিপস অবলম্বন করুন:

  • পায়ের চামড়া টেনে তুলবেন না।
  • পায়ের পাতার ত্বক যাতে শুষ্ক না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
  • ময়েশ্চারইজার লাগানোর আগে ত্বকের মরা কোষ পরিষ্কার করে নিন।
  • খুব ঠান্ডা আবহাওয়ায় পা সুতির পরিষ্কার মোজা দিয়ে ঢেকে রাখুন।
  • নিয়মিত অলিভঅয়েল ম্যাসাজ ত্বক ও নখ দুই -ই ভালো রাখে।
  • সপ্তাহে ২ বার খুব হালকা কুসুম গরম পানিতে চার টেবিল চামচ  পুদিনার রস মিশিয়ে পা ডুবিয়ে রাখুন। এতে  রক্ত সঞ্চালন ভালো হবে তার সঙ্গে ফাটা গোড়ালির সমস্যা ও দূর হবে।
  • পেট্রোলিয়াম জেলির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে পা ফাটার ওপর লাগান। পায়ের জন্য আরামদায়ক জুতা পরুন।

পিউমিসের ব্যবহার বাড়িয়ে দিন:

পায়ের যত্নের কথা বললেই পিউমিসের কথা আসে। পিউমিস পা থেকে মরা চামড়া তুলে দিতে সাহায্য করে। এতে করে পা হয় মসৃন ও ঝকঝকে। তবে পিউমিস ব্যবহারের আগে এর কীভাবে কী করবেন সেই সম্পর্কে জানা দরকার। 

১ম ধাপ

গরম পানি নিন একটি পাত্রে। তার মধ্যে আপনার পা ডুবিয়ে রাখৃুন। কমপক্ষে ১০/১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুৃন। এতে পায়ের ময়লা ও মৃত কোষ অপসারণ হবে সহজে। পানিতে আপনি শ্যাম্পু ও প্রয়োজেনে বেবি ওয়েল ব্যবহার করতে পারেন। 

২য় ধাপ

পিউমিসটি ব্যবহারের আগে পানিতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট  ভিজিয়ে রাখুন।

৩য় ধাপ

পায়ের গোড়ালি পিউমিস দিয়ে ঘষুন। তবে খুব বেশি জোরে না, এতে করে ত্বকের আঘাত হতে পারে।

৪র্থ ধাপ

যখন বুঝবেন আপনার পা নরম ও কোমল হয়ে উঠেছে তখন পা উঠিয়ে তোয়ালে দিয়ে মুছে শুকিয়ে নিন। তারপর লোশন লাগিয়ে নিন।

৫ম ধাপ

পিউমিস স্টোন ব্যবহারের আগে দেখবেন পরিষ্কার আছে কি না। অনেক সময় পিউমিস ময়লা জমে যায়। আবার পিউমিসটি সংরক্ষনের আগে ভালোভাবে শুকিয়ে নিন।

তবে পিউমিস স্টোন ব্যবহারের আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে।

  • পিউমিস স্টোন সবার জন্য না। ব্যথা লাগলে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
  • আপনার স্কিনের উপর বেশি ঘষাঘষি করবেন না।
  • পিউমিস কিছুক্ষন গরম পানির মধ্যে ভিজিয়ে রাখুন।
  • একজনের পিউমিস স্টোন আরেকজন ব্যবহার না করা ভালো। এতে করে ব্যাকটেরিয়া ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে।
  • নাজুক বা ক্ষত স্কিনে কখনো পিউমিস স্টোন ব্যবহার করবেন না।

পায়ের যত্নে আপনার করণীয়:

  • দৈনিক ২ ঘন্টা হাটা ও ওজন সুনিয়ন্ত্রিত রাখা।
  • সূর্যরশ্মির সংস্পর্শে দৈনিক ২-৩ ঘন্টা থাকবেন।
  • অনেক সময় বসে বা দাড়িয়ে থাকা।
  • মাঝেমধ্যে সাতার কাটা ও সাইক্লিং করা।
  • জর্দা, পান , জাফরানি , গুল ও ধুমপান থেকে বিরত থাকা।
  • যারা ডায়াবেটিস রোগে ভোগছেন তারা যে কোন আঘাত থেকে সতর্ক থাকবেন।
  • সব সময় নরম জুতা মোজাসহ পরিধান করবেন। স্যান্ডেল, স্লিপার পরা থেকে বিরত থাকবেন. ঘরে বা বাইরে খালি পায়ে হাটবেন না।
  • পায়ে যেন মশা না কামড়ায় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। এর মাধ্যমে ফাইলেরিয়া রোগ হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url