টনসিলের সমস্যা-টনসিলের কারন-টনসিল হলে করণীয়।

শীতে টনসিল সমস্যা সাধারণত বেড়ে যায়। আর ঠান্ডাজনিত কারণে যতগুলো সমস্যা সৃষ্টি হয় টনসিল সংক্রমণ তার মধ্যে অন্যতম। টনসিলের সমস্যা: একটি মারাত্মক সমস্যা। টনসিলের বিভিন্ন কারন রয়েছে। এসব কারন উপলব্ধি করে আমাদের টনসিল হলে করনীয় বিষয়গুলো মেনে চলা উচিত। টনসিল সমস্যা যে কোন বয়সে , যে কোন সময় হতে পারে।

টনসিলের সমস্যা-টনসিলের কারন-টনসিল হলে করণীয়।

এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। তবে প্রাথমিক অবস্থায় অনেক অসুখে ঘরোয়া উপায়ে সমাধান সম্ভব। সমস্যা জানান দেওয়ার পর থেকেই যত্ন নিলে ঘরোয়া কিছু উপায়ও সারিয়ে তুলতে পারেন টনসিলের অসুখ।  

আরও পড়ুন: গলায় বিধেছে মাছের কাটা ? জেনে নিন সমাধান।

পোস্ট সূচিপত্র :

 টনসিল কি ?

টনসিল হলো আমাদের শরীরের প্রটিরোধ ব্যবস্থার একটি অংশ এবং আমাদের মুখের ভেতরেই চারটি গ্রুপে তারা অবস্থান করে। এদের নাম লিংগুয়াল, প্যালেটাইন,  টিউবাল ও এডেনয়েড। এই টনসিল গুলোর কোন একটি প্রদাহ হলেই তাকে বলে টনসিলাটিস। টনসিল বলতে আমরা সচরাচর যা বুঝি তা কিন্তু আসলে টনসিলাইটিস। 

টনসিলাইটিস যে, শুধু শিশুদের হয় তা নয়। এটি শিশুদের বেশি হলেও যেকোনো বয়সে হতে পারে। বছরের অন্য সময়ের চেয়ে শীতে টনসিলের সমস্যা বেড়ে যায়। এই রোগে আগে ঘরোয়া চিকিৎসা আর অতিরিক্ত সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। 

টনসিলাইটিসের কারণ

টনসিলাইসের কারন, যেমনটি আগে আলোচনা করা হয়েছে, ভাইরাল ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ উভয় কারন হতে পারে। ব্যাকটেরিয়াজনিত টনসিলাইসের সবচেয়ে সাধারণ ধরন স্ট্রেপেটাকক্কাস পাইজেনেস দ্বারা সৃষ্ট। ব্যাকটেরিয়ার অন্যান্য স্ট্রেন রয়েছে যা টনসিলাইটিসও ঘটায়। ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট টনসিলাইটিস কোনো  চিকিৎসা ছাড়াই নিজে থেকেই সেরে যায়।

টনসিলাইটিসের লক্ষণ

আমাদের গলার ভেতর দিকের দুই পাশের দুটি গ্রন্থির নাম টনসিল। এই গ্রন্থি আমাদের শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেমের অংশ, যা প্রয়োজনে এন্টিবডি তৈরি করে প্রাথমিক রূপ প্রতিরোধে সাহায্য করে। শিশুদের এটি অন্যতম ও সাধারণ একটি সমস্যা, যা বছরে বারবারও হতে পারে।

কেন হয় টন ছিলে প্রদাহ? বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এর কারণ ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ । সাধারণত কম বয়সী শিশুরা ভাইরাস জনিত কারণে যেমন (ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস দ্বারা ) আক্রান্ত হয় । শীতের দিনে মৌসুমী ফুল হওয়ায় টনসিলাইটিসের বাড়ে । এছাড়া "গ্রুপ এ বিটা- হ্যামলাইটিক- স্ট্রেপেটাকক্কাস  ব্যাকটেরিয়া দ্বারা ৫ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুর হতে পারে।

লক্ষণ

  • মাঝারি থেকে তীব্র জ্বর
  • গলাব্যথা, খাবার গিলতে ও ঢোক গিলতে কষ্ট, শিশু খেতে চায় না, অনেক সময় বমি করে।
  • মাথাব্যথা, কানব্যথা।
  • মুখে দুর্গন্ধ ও মুখ থেকে লালা ঝরা।
  • গলার স্বরে পরিবর্তন।
  • টনসিল গ্রন্থি ফুলে যাওয়া, লাল হওয়া এবং প্রদাহ
  • লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া
  • কথা বলা, গিলতে অসুবিধা হওয়া
  • এ ছাড়া টনসিল বেশি বড় হয়ে গেলে শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে।

গলায় ভেতর টর্চ দিয়ে পরীক্ষা করলে দেখা যায় যে, দু দিকের টনসিল লাল হয়ে ফুলে গেছে । অনেক সময় এর উপর হলুদ বা সাদা আস্তরণ পড়ে। এছাড়া গলার দুই পাশের থাকার মত লিম্ফ নোড (লসিকাগ্রন্থি) রশিকে বড় হয়ে যায় ও ব্যথা করে।

কখন টনসিলাইটিসের অপারেশন করতে হয়

টনসিলাইটিসের চিকিৎসা হিসেবে সব ক্ষেত্রে টনসিলেকটমি অপারেশন বা টনসিল ফেলে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। যদি বারবার ইনফেকশন হয় (বছরে সাতবার বা পরপর দুই বছর বছরে পাঁচবারের বেশি), ক্রনিক টনসিলাইটিস, টনসিলের আশপাশে পুঁজ জমে যায়, অতিরিক্ত বড় টনসিলের কারণে শ্বাসকষ্টের সমস্যা অথবা ঘুমের মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাসে ব্যাঘাত বা অবসট্রাকটিভ স্লিপ এপনিয়া হয়, সেসব ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী অস্ত্রোপচার করা যেতে পারে।

ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ টনসিলাইটিস হওয়াতে পারে কি?

টনসিলাইটিসের প্রধান কারণ ভাইরাল সংক্রমণ, তবে কিছু ক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়া টনসিল গ্রন্থিগুলিকেও সংক্রমিত করতে পারে। Streptococcus pyogenes হল প্রধান ব্যাকটেরিয়া যা টনসিলাইটিসের জন্য দায়ী। ব্যাকটেরিয়াজনিত টনসিলাইটিস ছোট বাচ্চাদের তুলনায় বাড়ন্ত শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। ভাইরাল টনসিলাইটিসের চেয়ে ব্যাকটেরিয়াল টনসিলাইটিস নিরাময়ে বেশি সময় লাগে যদি চিকিৎসা না করা হয়। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে টনসিলাইটিসের ক্ষেত্রে, অ্যান্টিবায়োটিকগুলি প্রধান এবং সবচেয়ে কার্যকর  চিকিৎসা ।

টনসিলাইটিসের জটিলতা

দীর্ঘস্থায়ী এবং ঘন ঘন টনসিলাইটিস নিম্নলিখিত অবস্থার কারণ হতে পারে:

  • শ্বাস নেওয়ার সময় অসুবিধা এবং বাধা।
  • স্লিপ অ্যাপনিয়া যা গভীর ঘুমের সময় শ্বাস-প্রশ্বাসের ধরণে ব্যাঘাত এবং ব্যাঘাত ঘটায়।
  • টনসিলার সেলুলাইটিস, এমন একটি অবস্থা যেখানে সংক্রমণ কাছাকাছি টিস্যুতে ছড়িয়ে পড়ে।
  • পেরিটনসিলার ফোড়া, এমন একটি অবস্থা যেখানে টনসিল গ্রন্থির পিছনে পুঁজ জমা হয়।

ধরুন আপনার শিশু স্ট্রেপ থ্রোটে ভুগছে বা তার টনসিলাইটিস ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে হয়েছে, এবং সম্পূর্ণ অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসা শেষ করেনি। এই ক্ষেত্রে, আপনার শিশু নিম্নলিখিত জটিলতাগুলি অনুভব করতে পারে:

পোস্টস্ট্রেপ্টোকোকাল গ্লোমেরুলোনফ্রাইটিস-

এটি একটি জীবন-হুমকিপূর্ণ অবস্থা যেখানে কিডনি সঠিকভাবে কাজ করতে ব্যর্থ হয়; ফলস্বরূপ, অতিরিক্ত তরল এবং নাইট্রোজেন বর্জ্য রক্তে জমা হয়।

বাতজ্বর– 

শরীরের একটি প্রদাহ যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ এবং টিস্যু যেমন হার্ট, জয়েন্ট ইত্যাদিকে প্রভাবিত করে।

টনসিলাইটিসের ঝুঁকির কারণ

ব্যাকটেরিয়াজনিত টনসিলাইটিসের জন্য দুটি প্রধান ঝুঁকির কারণ নিম্নরূপ:

শৈশব ও কৈশোর-

ব্যাকটেরিয়াজনিত টনসিলাইটিস ছোট শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বেশি হয়। ব্যাকটেরিয়াজনিত টনসিলাইটিস ৫-১৫ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়.. ভাইরাল টনসিলাইটিস কম বয়সী শিশুদের ২-৫ বছর বয়সী শিশুদের দ্বারা বেশি দেখা যায়। ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের টনসিলাইটিস তুলনামূলকভাবে বিরল।

প্যাথোজেন এক্সপোজার- 

স্কুলগামী শিশুরা, আমরা সবাই জানি, তাদের বন্ধুদের সাথে ঘনিষ্ঠতার কারণে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় তারা সংক্রমণে বেশি আক্রান্ত হয়।

যেহেতু ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট টনসিলাইটিসের জন্য, অ্যান্টিবায়োটিক সাহায্য করে না। সেক্ষেত্রে  নিচের ব্যবস্থাগুলি সহায়ক হতে পারে:

  • নিশ্চিত করুন যে আপনার শিশুর গলা আর্দ্র রাখতে নিরাপদ পানি। একটি শুকনো জায়গা জীবের বৃদ্ধির জন্য আদর্শ।
  • নিশ্চিত করুন যে আপনার শিশু পর্যাপ্ত বিশ্রাম পায় যাতে শরীর নিজেই সুস্থ হয়ে ওঠে
  • উষ্ণ পানীয় যেমন একটি দুধ, হট চকলেট, গরম পানি সহ মধু, স্যুপ সাহায্য করতে পারে।
  • শরীরের প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আপনার শিশুকে আরও ভিটামিন সি অফার করুন।
  • লবণ এবং ঈষদুষ্ণ পানি দিয়ে গার্গল করা। গলা ব্যথার জন্য একটি চমৎকার প্রতিকার শুধুমাত্র যদি আপনার শিশু সঠিকভাবে গার্গল করতে পারে।
  • স্টিম ইনহেলেশনও একটি দুর্দান্ত প্রতিকার যা গলাকে আর্দ্র রাখে এবং জ্বালা কমায়।

টনসিলাইটিসের চিকিৎসা

ব্যাকটেরিয়াল টনসিলাইটিস একটি অ্যান্টিবায়োটিক কোর্স অনুসরণ করে নিরাময় করা যেতে পারে। স্ট্রেপ্টোকক্কাসের কারণে সৃষ্ট টনসিলাইটিসের জন্য, চিকিৎসার সবচেয়ে সাধারণ কোর্স হল ১০ দিনের জন্য মৌখিকভাবে অ্যান্টিবায়োটিক পেনিসিলিন গ্রহণ করা। পেনিসিলিনের প্রতি অ্যালার্জি থাকলে, আপনার ডাক্তার আপনার সন্তানকে অন্য কিছু অ্যান্টিবায়োটিক দেবেন।

উপসর্গ চলে গেলেও আপনার সন্তানকে অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসার সম্পূর্ণ কোর্স সম্পন্ন করতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিকের একটি অসম্পূর্ণ কোর্স ব্যাকটেরিয়াকে ওষুধের প্রতি প্রতিরোধী করে তুলবে, এবং লক্ষণগুলি আরও খারাপ হতে পারে, কখনও কখনও বাতজ্বর বা এমনকি কিছু ক্ষেত্রে রেনাল ডিসফাংশনও হতে পারে। অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের ডোজ এবং সময়কাল সম্পর্কে আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের কাছ থেকে নির্দেশিকা চাইতে হবে

সার্জারি- কিছু ক্ষেত্রে, টনসিলেক্টমি যা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে টনসিল গ্রন্থি অপসারণ করে তা একমাত্র বিকল্প থেকে যায়। আপনার ডাক্তার সাধারণত একটি টনসিলেক্টমি পদ্ধতির পরামর্শ দেবেন যখন টনসিলাইটিস ঘন ঘন হয়, বা ব্যাকটেরিয়াজনিত টনসিলাইটিসের ঘন ঘন আক্রমণ ঘটে যা অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিত্সা করা যায় না। 

দীর্ঘস্থায়ী টনসিলের প্রদাহ যখন শিশুদের শ্বাসকষ্টের দিকে নিয়ে যায় বা তাদের স্বাভাবিক ঘুম, গিলতে বা হজমের পদ্ধতিতে ব্যাঘাত ঘটায় তখন টনসিলেক্টমিও বেছে নেওয়া হয়। বরফ চুষলে তা প্রদাহকে প্রশমিত করতে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু ঠান্ডা পানি, সফ্ট ড্রিঙ্কস এবং চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন।

আসুন জেনে নিই টনসিল রোগের ঘরোয়া ৩টি চিকিৎসা- 

 লবণ ও পানি

গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে ব্যাপার নিন। এই সময় চাদর দিয়ে নিজেকে মরে ফেলুন। কান মাথা যেন অবশ্যই জড়ানো থাকে। পাখার বাতাস থেকেও দূরে থাকতে হবে। গলা ব্যথা টনসিলের অসুখ থেকে অনেকটা আরাম দেয় এই লবণ পানির ব্যাপার।

দুধে হলুদ

খুসখুসে কাশি থেকে টনসিলের সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই ফোটানোর দুধে এক সিমটি হলুদ মিশিয়ে খাওয়া এর অন্যতম ঔষধ। হলুদের আন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান সংক্রমণ দূর করে। এছাড়া হলুদের প্রাকৃতিকভাবেই এন্টি সেফটিক উপাদান থাকে। তাই হলুদের প্রভাবে গলায় প্রদাহ দূর হয় অনেকটাই।

গ্রিন টি মধু

তিন কাপ পানিতে এক চা চামচ গ্রিন টি এবং এক চামচ মধু দিয়ে মিনিট ফাঁসে ফুটিয়ে নিন। এইবার একটা প্লাসে রেখে দিন। উষ্ণ থাকাকালীন অল্প অল্প করে বারবার খাবেন। গ্রিন টি এন্টি অক্সিডেন্ট তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি এটি শরীরের জীবাণুর লং সঙ্গে লড়াই করে। মধুর এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান প্রদাহ  কমায় টনসিলের।

টনসিল হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবে না।

কমা টনসিল সমস্যা দেখা দিলে বেশ কিছু খাবাার এড়িয়ে চলতে হয়। এতে করে টনসিল সমস্যা অনেকোংশে কমে যায়। 
  • চিপস, চানাচুর, ফুচকা, চটপটি, কোমল পানীয় ও আই জাতীয় জাঙ্কফুড খাওয়া যাবে না।
  • অতিরিক্ত তেল, ঝাল ও অত্যাধিক মশলাযুক্ত খাবার খাওয়া যাবে না।
  • যেকোনো টক খাবার গলা ব্যাথা কয়েকগুন বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই টনসিলের ব্যাথা কমাতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে এবং টক খাবার খাওয়া থেকে সম্পুর্ণ বিরত থাকতে হবে।
  • বাধাকপি, ফূলকটি, ব্রকলি ও ছোলা জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না। কারন এই খাবারগুলো টনসিলের সমস্যা বাড়িয়ে তোলে।
  • মুলা ,মিষ্টি আলু, চিনা বাদাম না খাওয়া অতি উত্তম।
  • দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার যেমন পনির, চিজ খাওয়া বাদ দিতে হবে।
  • চিনি, রান্না করা গাজর, পাকা কলা , শুকনো ফল, মধু , ময়দার রুটি, আলু, সাদা পাস্ত ও মিষ্টি কমলা পরিমানে খান। কারন, এই খাবারগুলো শরীরে কার্বহাইড্রেটের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
এছাড়াও হজমে সমস্যা হয় বা বাধা দেয় এমন খাবার খাওয়া যাবে না। যতটা সম্ভব উপরের সব বিধি নিষেধ মেনে চলতে পারলে একজন ব্যাক্তির টনসিল সমস্যা কমতে খুব কম সময় লাগবে। 

কখন ডাক্তার দেখাবেন?

আপনার শিশু বা কিশোর-কিশোরীর নিম্নলিখিত উপসর্গ দেখা দিলে আপনাকে অবশ্যই চিকিৎসা সহায়তা নিতে হবে:

  •  ২৪-৪৮ ঘন্টার বেশি সময় ধরে গলা ব্যথা অনুভব করা।
  • গিলতে অসুবিধার কারণে খাবার এবং পানি প্রত্যাখ্যান করা।
  • উদ্বিগ্ন, খিটখিটে এবং চরম ক্লান্তি দেখাচ্ছে।
  • জ্বর
  • শ্বাস কষ্টের সমস্যা।
  • গলায় প্রচন্ড ব্যাথাা।
  • এমনকি লালা গিলে ফেলতেও অক্ষম এবং এভাবে ক্রমাগত ঝরছে।
পরিশেষে, টনসিলাইটিস একটি মাঝারিভাবে সংক্রামক রোগ, তাই এর বিস্তার পরীক্ষা করার জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনাকে অবশ্যই আপনার সন্তানদের নিচে দেওয়া ৩টি পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করতে  অনুপ্রেরণা দিবেন।

  • সঠিকভাবে হাত ধোয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে খাবারের আগে এবং পরে ।
  • নিশ্চিত করুন যে আপনার বাচ্চারা তাদের চামচ, খাবার, পানির বোতল বা অন্যান্য পাত্র তাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার না করে।
  • টনসিলাইটিস থেকে সেরে ওঠার পর তাদের পুরনো টুথব্রাশগুলো ফেলে দিন

একজন দায়িত্বশীল অভিভাবক হওয়ার কারণে, আপনার সন্তান যখন ঘন ঘন টনসিলাইটিসে আক্রান্ত হয় তখন তার কার্যকলাপকে সীমাবদ্ধ করাও গুরুত্বপূর্ণ যাতে তারা অন্যদের মধ্যে সংক্রমণ না ছড়ায়। আপনি নিম্নলিখিত মেনে চলতে পারেন:

  • নিশ্চিত করুন যে আপনার অসুস্থ শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে থাকে।
  • আপনার শিশু কাশি এবং হাঁচি দেওয়ার সময় তার নাক এবং মুখ ঢেকে রাখে তা নিশ্চিত করুন।
টনসিলাইটিস ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার কারণে হতে পারে। টনসিলাইটিস, যদিও শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের একটি সাধারণ সমস্যা, যদি চিকিত্সা না করা বা উপেক্ষা করা না হয় তবে এটি জটিলতার কারণ হতে পারে। এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য শৈশব থেকেই অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের মধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস গড়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url