স্বাস্থ্যের জন্য আটা ভালো নাকি ময়দা ভালো ? কোনটা বেশি পুষ্টিকর ?

আমাদের দেশে প্রতিদিন সকালের নাস্তায় রুটি বেশ জনপ্রিয়। এ রুটি মূলত আসে আটা কিংবা ময়দা থেকে। এখন প্রশ্ন জাগে মনে, কোনটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো ? আটা নাকি ময়দা । মানব শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুন আটাতে বেশি নাকি ময়দাতে বেশি । এ সব অজানা প্রশ্নের উত্তর নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের টপিক্স। 

স্বাস্থ্যের জন্য আটা ভালো নাকি ময়দা ভালো ? কোনটা বেশি পুষ্টিকর ?

স্বাস্থ্যসচেতন মানুষরা প্রায়ই একটা বিষয়ে দুশ্চিন্তা করেন। ভালো আটা কোনটা ? স্রেফ গম ভাঙানো আটা ভালো, নাকি পরিশোধিত আটা ভালো ? আসলে পরিশোধিত আটাকে আমরা ময়দা বলি। এখানে এদের সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন বিশেষজ্ঞরা।

আরও পড়ুন: প্রতিদিন ওজন বেড়ে যাচ্ছে ? জেনে নিন আপনার করনীয়।

পোস্ট সূচিপত্র:

প্রস্ততপ্রণালী

আটা এবং ময়দা বানানোর প্রক্রিয়া আসলে ভিন্ন। গম পিষে তৈরি করা হয় আটা। এতে গমের বীজের সঙ্গে তার খোসাও পিষে ফেলা হয়। িএ কারনে আটার রং অনেকটা বাদামী হয়। কিন্ত ময়দা বানাতে আটাকে পরিশোধিত করা হয়। আলাদা করা হয় খোসা। এ কাজটি কয়েক দফা করলেই ময়দা মেলে। এ কারনে ময়দার রং ধবধবে সাদ হয়।

আটাই বেশি স্বাস্থ্যকর

ময়দার চেয়ে আটাকে বেশি স্বাস্থ্যকর বলে মনে করা হয়। কারণ আটায় প্রচুর ফাইবার থাকে বা ভক্ষনযোগ্য। এতে ভিটামিন এবং খানিজও থাকে বেশি। কিন্ত ময়দায় তেমন কিছু থাকে না। এতে অবশ্য ক্যালোরিও থাকে না।

রাসায়নিক ব্লিচ

ময়দাকে “অল পারপসস ফ্লাওয়ার“ বলা হয়। এর সুন্দর শুভ্র চেহারা ও মসৃনতা আনার জন্যে রাসায়নিক উপাদান দিয়ে ব্লিচ করা হয়। কিন্ত আটায় এসব প্রক্রিয়া প্রয়োগ করা হয় না। ফলে  তা থাকে অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর এবং উপাদেয়।

পুষ্টি উপাদান

আটায় অনেক ধরনের পুষি।ট উপাদান মেলে। এতে আছে ফোলেট, রিবোফ্লাবিন এবং ভিটাইম বি১, বি৩ এবং বি৫। এদিক থেকে অনেক পিছিয়ে আছে ময়দা। পরিশোধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে  আসলে আটা থেকে প্রায় সব পুষ্টি উপাদান বেরিয়ে যায়।

আরও পড়ুন: প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ভেজা কিসমিসের উপকারিতা

ফাইবার

সাদা ময়দার চেয়ে আটায় বেশি ফাইবার থাকে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারে সবেচেয়ে বেশি উপকার। কোষ্ঠকাঠিন্য কমে, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে এবং ওজন হ্রাস করে।

অন্যান্য উপাদান

আটায় থাকে অ্যামাইনো এসিড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এগুলো দেহের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনায় সহায়তা করে। উদ্বেগ, ঘুম না আসা, মাথাব্যাথা এবং বিষন্নতা সারাতে এই উপাদানগুলো বেশ কাজ করে।

গ্লাইসেমিক ইনডেক্স

পরিশোধিত আটা বা ময়দা গ্লাইসেমিকক ইনডেক্স আটার অনেক ওপরে অবস্থান করে। এই ইনডেক্স এ যারা ওপরে অবস্থান করে সে সব খাবার রক্তে গ্লকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এতে ইনসুলিন উতপাদন বাধাগ্রস্ত হয় এবং ডায়াবেটিসের ঝুকি বেড়ে।

ভিন্ন ব্যবহার

সাধারণত ময়দা ব্যবহৃত হয় কেক, কুকি, পাস্তা, নুডলস,মাফিন এবং নানরুটি বানাতে। আর রুটি, পুরি ও ডেজার্ট বানাতে লাগে আটা।

আটা ও ময়দার কিছু গুনাগুনগত পার্থক্য :

  • কম বেশি আমরা সকলেই জানি যে আটা ময়দার থেকে ভালো। কিন্ত খাওয়ার আগে বা পরে বেশ কিছু বিষয় আমাদের মাথায় রাখা উচিত। তা হলো নিউট্রিশন ভ্যালু।
  • এনার্জির যোগানে আটার জুরি মেলা ভার। এতে ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি৩ ও ভিটামিন বি৫ থাকে। 
  • এছাড়াও আটার উপকারিতাতে নতুন রক্তকোষের জন্ম দেয় শরীরে। কিন্ত ময়দার ভিটামিন গুন নষ্ট হয়ে যায় তাড়াতাড়ি।
  • ময়দা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য তা মোটেও উপকারী নয়।  
  • ময়দার রুটি খিদে বাড়িয়ে। তাই অনেকেই বেশি খেয়ে ফেলেন। যা মেদ বাড়ার কারণ হয়ে দাড়ায়। আটার রুটিতে তেমন কোন সমস্যা দেখা দেয় না। 
  • ময়দায় শরীরে হাড়ের ক্ষয় বৃদ্ধি পায়। এটি অতিমাত্রায় অ্যাসিডিক হয়ে থাকে। তাই ময়দা খাওয়া এড়িয়ে যাওয়াই ভালে।
  • বাতের সমস্যা বা আর্থরাইটিরেস মত সমস্যায় ময়দা না খাওয়াই শ্রেয়। এতে শরীরর অনেক সুস্থ থাকে। আটার রুটি  খাওয়া অভ্যাস করে ফেলতে হবে শরীর ঠিক রাখতে হলে।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url