কর্মজীবী বাবা-মায়ের সন্তান থাকবে কার দায়িত্বে-সন্তানের দায়-দায়িত্ব

আধুনিক যুগে অসংখ্যা দম্পতি আছেন, যারা দুজনেই কর্মজীবী। চাকুরি কিংবা ব্যবসার কারণে তাদের দিনের একটা বড় সময় বাড়ির বাইরে কাটাতে হয়। যাদের বাচ্চা ছোট কিংবা কম বয়সী, সেইসব দম্পতির দুশ্চিন্তার শেষ থাকে না। 

কর্মজীবী বাবা-মায়ের সন্তান থাকবে কার দায়িত্বে-সন্তানের দায়-দায়িত্ব

কিছুৃ পরিবারে হয়তো দাদা-দাদী, নানা-নানীরা দেখভাল করেন বাচ্চাদের। কিন্ত যেসব পরিবারে এই সুযোগ থাকে না, তারা পড়ে যান অকূল পাথারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই  নারীটিকে চাকুরি ছেড়ে বাসায় থাকতে হয়। কিন্ত এটা আসলে কোনো সমাধান নয়।

এই সময়ের জীবনযাত্রার মান, দ্রব্যমূল্যসহ সকল সেক্টরের ব্যয়বৃদ্ধির কারণে সংসার চালাতে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চাকুরি করতে হয়। তাছাড়া অর্থনৈতিক স্বাধীনতার কারণে অনেক নারীরা চাকুরী করে থাকেন। এই বাস্তবতা মেনে নিতেই হবে। 

যারা মনে করেন, বাচ্চার জন্য মায়ের চাকুরী ছাড়া ‍ উচিত, তারা কোনো যৌক্তিক সমাধান হতে পারে না। বাধ্য হয়েই এসব দম্পতি গৃহকর্মীর কাছে নিজের সন্তানকে রেখে দীর্ঘ  সময়ের জন্য কর্মক্ষেত্রেই চলে যান। 

কী করবেন কর্মজীবী দম্পতিরা ?

. উন্নত দেশসমূহে এমনকি এশিয়ার অনেক দেশেও সরকারী এবং বেসরকারী উদ্যোগে  “ডে কেয়ার সার্ভিস“ এর ব্যবস্থা আছে। এসব জায়গায় সন্তানকে রেখে নিশ্চিন্তে কর্মস্থলে যেতে পারেন বাবা-মা ।  বাংলাদেশে সরকারি পর্যায়ে কিছু এবং দু-একটি বেসরকারি সংস্থা এই ‘ডে কেয়ার সার্ভিস‘ চালু করেছে, যা নিতান্তইর  অপ্রতুল।

. অনেক দম্পতিই পরিবারের অন্যান্য সদস্যের কাছে সন্তানকে রেখে বাইরে যান। তারা হতে পারেন বাবা-মা , শশুর-শাশুড়ি কিংবা অন্যান্য স্বজন। কিন্ত পারিবারিক কারনেই সব সম্পতিরা এই সুবিধা পান না। পাশাপাশি বয়স্ক ব্যাক্তিরা মাঝেমধ্যেই অসুস্থতায় ভোগেন। সুতরাং এই উপায়ের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকা যায় না। তবে সুযোগ  থাকলে সেটার ব্যবহার করাই শ্রেয়।

৩. নবজাতক শিশুকে নিয়ে কর্মস্থলে ডেস্কে বসে কাজ করারও রেকর্ড আছে। তবে সব প্রতিষ্ঠান এ ব্যাপারে সদয় না। সব অফিস শিশু কে নিয়ে কাজ করার অনুমতি দেয় না। তাছাড়া ফিল্ড ওয়ার্কে শিশুকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করা বলতে গেলে অসম্ভব। কর্মজীবী বাবা-মায়ের জন্য সরকারিভাবে এ বিষয়ে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহন করে নীতিমালা তৈরি করা যেতে পারে।

. কোনো উপায়ই না থাকলে গৃহকর্মীর কাছে সন্তানকে রেখে কাজে যেতে বাধ্য হন দম্পতিরা। কিন্ত গৃহকর্মী সেই সন্তানের সঙ্গে কী আচরণ করবে তা জানার কোন  সুযোগ থাকে না। শিশুরা তো বলতেও পারে না। এই সমস্যার সমাধান  হতে পারে সিসিটিভি ক্যামরা। আজকাল ৫ হাজার টাকার মধ্যেই ভালো মানের আইপি ক্যামরা পাওয়া যায়। যা ঘরে সেট করে ‘অফিসে  বসে ক্যামেরায়‘ সব দেখা যাবে।

৫. সবচেয়ে বড় কথা হলো, সন্তানকে নিজের কাছে রাখার চেষ্টা। তবে সরকার কার্যকর কোনো নীতিমালা তৈরি করলে তা সম্ভব। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলাকে এগিয়ে আসতে হবে। অফিসে বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানকে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। সবাইকে এভাবে পৃথিবতে আসতে হয়েছে। সুতরাং একটু মানবিক বোধ থাকলে ই ইতিবাচক কিছু করা সম্ভব। 





এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url