শীতে সর্দি- খুসখুসে কাশিতে করণীয়-সর্দি কাশিতে ঘরোয়া চিকিৎসা

শীতে সর্দি-কাশি

শীত শুরু হলে সাথে কাশি,সর্দি নি:শ্বাসে সমস্যা হওয়ার মতো একাধিক শারীরিক সমস্যা ঝেকে বসে আমাদের শরীরে। শীতকালে বায়ুদূষণ ও ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে বিভিন্ন রোগে শোকে ভোগে মানুষ। তাই গলা ঠিক রাখতে, এই সময় কাশি থেকে মুক্তি পেতে বাড়িতেই কিছু নিয়ম ট্রাই করা যেতে পারে। 

শীতে সর্দি- খুসখুসে কাশিতে করণীয়-সর্দি কাশিতে ঘরোয়া চিকিৎসা

রাস্তার ধূলাবালি , রক্তস্বল্পতা, ক্যালসিয়ামের অভাব এবং বিভিন্ন ভাইরাসের সংক্রমনে সর্দি হয় থাকে। কিন্ত নিয়ম-কানুন মেনে চললে এবং লক্ষনভিত্তিক ঔষুধ খেলে রোগের ভোগান্তি হতে মুক্তি পাওয়া যায়।

পোস্ট সূচিপত্র

  • সর্দি’র লক্ষন
  • সর্দি নিরাময়ে একক ভেষজ :
  • সর্দি-কাশি নিবারণে কিছু নিয়ম মেনে চলুন :
  • খুসখুসে কাশি হলে নিচের নিয়ম গুলো বেশি ফলো করুন :
  • স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ :

সর্দি’র লক্ষন :

১. নাক দিয়ে অকারণে তাজ পানির মতো টপটপ করে সর্দি পড়ে। 

২. মাথা ভারি হয়ে আসে।

৩. প্রায়ই নাক বন্ধ হয়ে থাকে। 

সর্দি নিরাময়ে একক ভেষজ :

  • সর্দিকাশি বা সর্দিজ্বরে সাজনা পাতার ঝোল , আদা চা খেলে উপকার হয়।
  • জ্বরজ্বর ভাব, নাক বন্ধ , কপাল ভার এরকম অবস্থায় কাচা পিয়াজের রস করে নাক দিয়ে গন্ধ টানলে সর্দি থাকে না এবং জ্বরের ভাব চলে যায়।

সর্দি-কাশি নিবারণে কিছু নিয়ম মেনে চলুন :

  • সর্দি-কাশি দূরে রাখতে মধুর জুড়ি মেলা ভাব। মধুতে আছে একাধিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। বিশেষ করে  কাশির সমস্যা থাকলে অবশ্যই মধু খান। প্রতিদিন সকালে খাটি পেটে মধু খেতে পারেন। তাছাড়া খাবারে চিনির বদলেও ব্যবহার করা যেতে পারে মধু্। 
  • সর্দির সমস্যা থাকলে প্রতিদিন খাবারে রাখুন সি সমৃদ্ধ খাবার। কমলালেবু, পাতিলেবু, মোসাম্বি লেবু, বাতাবি লেবু ও পেয়ার এমন কি কাচা মরিচেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। 
  • রোদ থেকে এসে এসিতে ঢোকার সময় সাবধান। তাপমাত্রার তারতম্যের কারনে সহজেই হতে পারে সর্দি। এসিতে ঢোকার আগে পাখার নিচে অথবা ছায়াযুক্ত স্থানে কিছুক্ষন জিরিয়ে নিতে পারেন। 
  • সর্দির কাশির শংকা থাকলে এয়ার কুলার ব্যবহার না করাই ভালো। এয়ার কুলারের ঠান্ডা আর্দ্রা হাওয়ায় সাময়িক শস্তি মিললেও হিতে বিপরীত হতে পারে। 
  • রোদে বের হলে সঙ্গে অবশ্যেই ছাতা বা টুপি ব্যবহার করুন ।
  • কনকনে ঠান্ডা পানি বা পানীয় এড়িয়ে চলুন।রোদ থেকে এসে তো এসব হাতেও ধরা যাবে না। 
  • জীবাণূূর সংক্রমন থেকেও খুব সহজেই সর্দি-কাশি হয়। ট্রেনে বা বাসে যাতায়েতের পর বাড়ি ফিরে অবশ্যই হাত মুখ ধোবেন। খোলা জায়গায় রাখা খাবার খাবেন না। 
  • গোসলের পর ভেজা চুল নিয়ে বের হলে হতে পারে মাইগ্রেনের সমস্যা । হেয়ার ড্রায়ার বা তোয়ালে দিয়ে চুল ভালো করে শুকিয়ে তার পর বের হন। 
  • আইসক্রিম খান। তবে খাওয়ার পর অবশ্যই এক গ্লাস সাধারণ তাপমাত্রার পানি পান করুন।  কাশি হবে না। 
  • বৃষ্টিতে ভিজলে অবশ্যই বাড়ি ফিরে গোসল করে ‍চুল শুকিয়ে নিন।

খুসখুসে কাশি হলে নিচের নিয়ম গুলো বেশি ফলো করুন :

মধু :

মধু এমনিতেই ওয়েদার চেন্জের সময়, ঠান্ডা লাগা থেকে মুক্তি দেয় মধু। যা বহু বছর ধরে সর্দি-কাশি কমাতে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস, অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল ও অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি উপাদান থাকে যা গলায় জমা সর্দি-কাশি দুর করতে সাহায্য করে। 

এমনকি চিকিৎসকরা সমীক্ষায় দেখেছেন ,সর্দি-কাশি কমানোর যে কোনও ওষুদের থেকেও মধু বেশি কার্যকরী। গলা খুসখুস করলে চায়ের সঙ্গে দু‘চামচ মধু বা গরম পানি ও লেবুর সঙ্গে দু‘চামচ মধু খেলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে । খুসখুসে কাশি কমাতে পারে।

লবণ পানি: 

লবণ পানিতে গার্গল ফুসফুসে মিউকাস নষ্ট করে, পাশাপাশি ন্যাসাল প্যাসেজ পরিষ্কার হয় লবণ পানি গার্গল করলে। কাশি থাকলে এক কাপ ঈষৎ উষ্ণ পানিতে ১/৪ চামচ লবণ দিয়ে, তা দিয়ে গার্গল করলে খুব তাড়াতাড়ি উপশম মিলবে।

দিনে অনেকবার করলে আরও ফল পাওয়া যাবে। তবে, বেশি আদা খাওয়া ভালো না, কারন এটি পেটের সমস্যা তৈরি করে ও হার্ট বার্নও করে। তাই সামান্য আদা দিয়ে দিনে একবার কয়েকদিন চা বা সরবত খেলে উপশম পাওয়া যেতে পারে।

পুদিনা:

পিপারমিন্ট বা পুদিনা সকলেরই জানা পিপারমিন্ট বা পুদিনার মেন্থল থাকে যা নাকে সর্দি জমলে ন্যাসাল এরিয়া পরিষ্কার করে বা গলায় সর্দি জমলেও তা পরিষ্কার করে দেয়। কাশতে কাশতে গলা ব্যাথা হয়ে গেলে পুদিনা সেই ব্যাথা কমাত সাহায্য করে। দিনে ২/৩ বার পুদিনা দিয়ে বানানো চা খেলে কাশিও কমতে পারে, গলা ব্যাথাও বা অস্বস্তিতেও উপশম মিলতে পারে।

ইউক্যালিপটাস :

ইউক্যালিপটাস এসেনশিয়াল অয়েলও এ ক্ষেত্রে খুবই উপকারী। তাড়াতাড়ি ফল পেতে নারকেল তেল বা অলিভ অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে বুকে ও গলায় মালিশ করলে উপশম মিলতে পারে। যদি তা না হয়, ইউক্যালিপটাস এসেনশিয়াল অয়েলের স্টিম নিলেও গলা পরিষ্কার হয়ে যায়।

স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ :

  • স্বাভাবিক সব রকম খাবার খাওয়া যাবে।
  • এলার্জিজনিত খাদ্য বা ফ্রিজের পানি বা শীতল পানীয় না খাওয়াই ভালো।
  • যেখানে-সেখানে কফ, সর্দি বা থু থু ফেলা উচিত নয়।
  • বেশি রৌদ্র বা বেশি ঠান্ডায় চলাফেরা না করাই উত্তম।
  • বেশি ধূলাবালিতে নাকে রুমাল বা মাস্ক ব্যবহার করা উত্তম।
দৈনন্দিন জীবনে কিছু নিয়ম মেনে চললেই কাশি থাকবে দূর। খাবার তালিকায় নিয়ে আসতে হবে ছোট ছোট পরিবর্তন। ব্যস, শরীর থাকবে সুস্থ, ইনশাল্লাহ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url