বন্ধ্যাত্ব থেকে মুক্তির উপায়-বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা ও প্রতিকার।

বন্ধ্যাত্ব 

বন্ধ্যাত্ব বর্তমানে একটি কঠিন সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। পৃথিবীজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রতি বছর প্রজনন সমস্যা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেন। প্রজনন অক্ষমতা বিশ্বজুড়ে একটি চ্যালেঞ্জ। এর মোকাবেলা করতে হবে ধীরস্থির মনোভাব নিয়ে। আপনাকে হতে হবে ধৈর্যশীল, হতে হবে সহযোগী মনোভাবাপন্ন এবং সর্বোপরি প্রজনন অক্ষমতা বিষয়ক জ্ঞান বৃদ্ধি আপনার সমস্যা সমাধানে ভুমিকা রাখতে পারে। 

বন্ধ্যাত্ব সমস্যা থেকে মুক্তির উপায়-বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা ও প্রতিকার।

প্রজনন  সমস্যার ব্যাপারে আপনি হতোদ্যম ও বিভ্রান্তিকর অবস্থার মুখোমুখো হলেও আপনাকে ইতিবাচক মনোভাব নিয়েই এগুতে হবে। অনেক ক্ষেত্রেই চিকিসক সমস্যার মূল খুজে সম্ভাব্য সকল কৌশল প্রয়োগ করে আপনার সমস্যার সমাধান করে দিতে পারেন।

সাধারন পদক্ষেপ থেকে শুরু করে চিকিসা বিজ্ঞানে অনেক আধুনিক মাধ্যমে বর্তমানে সন্তান না হওয়া সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হচ্ছে।

পোস্ট সূচিপত্র

  • বন্ধ্যাত্ব কি ?
  • বন্ধ্যাত্বের প্রকারভেদ:
  • বন্ধ্যাত্বের কারন :
  • গর্ভধারনে প্রতিবন্ধকতা :
  • যথেষ্ট সুস্থ শুক্র আছে কি ?
  • ডিম্ব  নি:সৃত হয়েছে কি ?
  • শুক্র ও ডিম্ব মিলিত হতে পারছে কি ?
  • ভ্রুন কি প্রতিস্থাপিত হতে পারে ?
  • বয়স কি প্রজননকে ব্যাহত করছে ?
  • জীবনযাত্রায় সেকল ধরণ গর্ভধারনের প্রতিবন্ধকতা হতে পারে
  • ধুমপান 
  • মদ ও মাদক
  • অন্ডকোষের তাপ
  • ওজনের সমস্যা
  • কঠোর ব্যায়াম
  • অন্যান্য কারন
  • স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ

বন্ধ্যাত্ব কি ?

সন্তান ধারনে অথবা জন্মদানে অক্ষমতাকে বন্ধ্যাত্ব বলে। সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে এক বছর কোন জন্মবিরতিকরণ পদ্ধতি ছাড়া নিয়মিত যৌনমিলনের পরেও সন্তান ধারনে ব্যর্থতাকে বন্ধ্যাত্ব বলে।

বন্ধ্যাত্বের প্রকারভেদ:

 বন্ধ্যাত্ব দুই প্রকার যথা প্রাইমারী  ও সেকেন্ডারী।

বন্ধ্যাত্বের কারন :

অনেক কারনেই বন্ধ্যাত্ব হতে পারে। বর্তমানে সমীক্ষায় দেখা যায় যে, অর্ধেকেরও বেশি বন্ধ্যাত্ব ঘটে মহিলাদের বিভিন্ন জটিলতার কারনে। এরপরই রয়েছে পুরুষের শুক্রের সমস্যা ও কিছু কিছু ক্ষেত্রে অজানা কারনে বন্ধ্যাত্ব হয়ে থাকে।

বর্তমানে বিভিন্ন দেশে বন্ধ্যাত্বতের হার বেড়ে গেছে। প্রথম সন্তান ৩০ বছরের বেশি বয়সে হওয়ার কারনে বর্তমানে বন্ধ্যাত্বের সংখ্যা ৩%-৫%। জরায়ুর ভিতরে বিভিন্ন প্রকার জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতি ব্যবহারেরর ফলে যৌনবাহিত রোগের ঝুকি বেশি থাকে। ফলশ্রুতিতে সন্তান ধারনে অক্ষমতা বা বন্ধ্যাত্বের সৃষ্টি হতে পারে। 

গর্ভধারনে প্রতিবন্ধকতা :

গর্ভসঞ্চার বা গর্ভধারণের যে পদ্ধতি তা আপাতদৃষ্টিতে সরল মনে হলেও তা যে সমসময় ঐ সরল পথে চলবে তা নয়। ব্যক্তির বয়স, জীবনযাত্রার ধরণ, শারীরিক সমস্যা ইত্যাদি প্রজনন অক্ষমতার কারন হতে পারে। অরক্ষিত যৌন সঙ্গমে কেউ এক বছরের মধ্যেই গর্ভবতী হতে না পারা তাকে প্রজনন অক্ষমতা বলে বিবেচনা করা যেতে পারে।

প্রজনন অক্ষমতার জন্য স্বামী বা স্তুীর যে কোন একজন অথবা উভয়েই দায়ী হতে পারেন। কখনো কখনো কোন কারন নাও পাওয়া যেতে পারে। চিকিসকের সহায়তার পাশাপাশি আপনি বা আপনার স্ত্রীর সন্তান না হওয়ার সম্ভাব্য কারণ বা সম্ভাব্য চিকিসা কৌশল নিয়ে ভাবতে পারেন। 

সন্তান না হওয়ার জন্য নিজেকে অপরাধী ভাববেন না বা একে অপরকে দোষারোপ করবেন না। এই চ্যালেঞ্জ গ্রহন করে একে অপরের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন।

যথেষ্ট সুস্থ শুক্র আছে কি ?

মহিলার ডিম্বকে নিষিক্ত করার জন্য একজন পুরুষকের অবশ্যই যথেষ্ট সক্রিয় এবং পরিণত শুক্র উপাদনে সক্ষম হতে হবে।

ডিম্ব নি:সৃত হয়েছে কি ?

ডিম্ব ও শুক্রের মিলনের জন্য ডিম্বাশয় থেকে একজন মহিলার ডিম্ব নিয়মিত নি:সৃত হওয়া আবশ্যক।

শুক্র ও ডিম্ব মিলিত হতে পারছে কি ?

শুক্র ও ডিম্বের মিলনের জন্য উভয়কেই পুরুষ বা মহিলার প্রজননতন্ত্রে বাধাহীনভাবে চলাফেরার সুযোগ থাকতে হবে। এদের চলার পথে যেন কোন প্রতিবন্ধকতা না থকে।

 ভ্রন কি প্রতিস্থাপিত হতে পারে ?

একটি ভ্রুন কে অবশ্যই জরায়ু দেয়ালে প্রতিস্থাপিত হতে সক্ষম হতে হবে।

বয়স কি প্রজননকে ব্যাহত করছে ?

৩৫ বছর বয়সে  মহিলাদের ডিম্বের সংখ্যা ও মান যথেষ্ট কমে যায়। ৪০ বছর বয়সে এই সমস্যা আরো বেড়ে যায়। এ কারণে একজন মহিলার বয়স যদি ৩৫ বছরের বেশি হয় তাহলে তর কেন সন্তান হচ্ছে না  তা মূল্যায়নে কখনো বিলম্বিত করা উচিত নয়।

একজন পুরুষ সারা জীবন শুক্র উপাদন করতে পারে। সুতরাং প্রজনন সমস্যায় পুরুষের বয়স কোন বিষয় নয়। 

জীবনযাত্রায় সেকল ধরণ গর্ভধারনের প্রতিবন্ধকতা হতে পারে

ধুমপান 

ধুমপানের কারনে মহিলাদের ইস্ট্রোজেনের মাত্রায় পরিবর্তন এবং ডিম্বের উ..পাদন হ্রাস পতে পারে। জরায়ু  গ্রীবার শ্লেষ্মায় নিকোটিনের উপস্থিতি শুক্রের জন্য বিষাক্ত হতে পারে। অন্যদিকে  ধূমপানের কারনে পুষুষদের শুক্রের সংখ্যা কমে যায়, শুক্রের চলাচল ব্যাহত হয় এবং অস্বাভাবিক আকৃতির শুক্র তৈরি হয়।

মদ ও মাদক

অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে শুক্রের সংখ্যা কমে যায় েএবং অস্বাভাবিক শুক্র উপাদিত হয়। যেমন- মারিজুয়ানা এবং কোকনের ব্যবহারে মহিলাদের হরমোন উপাদন বিঘ্ন ঘটে এবং পুরুষের শুক্র উপাদন হ্রাস পায়।

অন্ডকোষের তাপ

পুরুষদের অন্ডকোষ সারা দেহের তাপমাত্রার তুলনায় কয়েক ডিগ্রি শীতল। অন্ডকোষ যখন খুব বেশি গরম থাকে শুক্রের উপাদন হ্রাস পায়। বেশি তাপমাত্রা, প্যান্টি পরিধান ইত্যাদি অন্ডকোষের তাপ বৃদ্ধি করতে পারে এবং প্রজনন ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

ওজনের সমস্যা

যে সকল মহিলা বেশি স্থুলকায় অথবা কম ওজনের তারা প্রায়ই গর্ভধারনে সমস্যায় পড়েন। খুব বেশি অথবা খুব কম চর্বি  হরমোন মাত্রাকে প্রভাবিক করে এবং ডিম্বক্ষরনে সমস্যা সৃষ্টি করে।

কঠোর ব্যায়াম

ঘন ঘন কঠোর ব্যায়াম ( যেমন-প্রতিদিন লম্বা পথে দৌড়ানো) মহিলাদের হরমোন, উপাদন কমিয়ে দিতে পারে। পুরুষদের ক্ষেত্রেও এ ধরনের কঠোর ব্যায়ম অনিয়মিত মাসিক বা রজ:রব্দতার কারন হতে পারে। এর ফলেও প্রজনন সমস্যা দেখা দিতে পারে।

অন্যান্য কারন

সন্তান ধারনে সমস্যা সৃষ্টি করছে, এমন আরো কিছু কারণ নিয় চিকিসক আপনার সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন। কিছু তৈলাক্ত পদার্থ  শুক্র জখম বা ধংস্ব করে ফেলতে হবে। কিছু ঔষুদ সেবনের ফলে হ্রাস পেতে পারে শ্রুক্রের সংখ্যা। অনেক মহিলার ক্ষেত্রে উদ্বেগ ও অবসাদজনিত কারনে ডিম্বক্ষরণ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ

মনে রাখবেন আপনারা এ্ককভা্বে কেবল এই সমস্যার শিকার নন। পৃথিবীতে আরো অসংখ্যা দম্পতি আছেন যারা স্বাভাবিকভবে সন্তানের মাতৃত্ব বা পিতৃত্ব অর্জন করতে পারেননি। সুতরাং চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অন্য কোনো পদ্ধতিতে সন্তানের মা হতে চেষ্টা করুন। স্বামী-স্ত্রী উভয়ে মিলে যে সিদ্ধান্ত্বই নিন বা কেন তা আপনাদের পারিবারিক জীবনকে আনন্দময় করে তুলবে।
 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url